বাংলাদেশ বিজনেস অ্যাওয়ার্ড ২০২৪: বর্ষসেরা প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ

‘বর্ষসেরা প্রতিষ্ঠান’র পুরস্কার পেয়েছে ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ। ছবি: প্রবীর দাশ/স্টার

বাংলাদেশ বিজনেস অ্যাওয়ার্ড ২০২৪-এ 'বর্ষসেরা প্রতিষ্ঠান'র পুরস্কার পেয়েছে ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ।

বাংলাদেশে অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতি ও সম্মান জানাতে প্রতি বছর ডিএইচএল এক্সপ্রেস বাংলাদেশ ও দ্য ডেইলি স্টার যৌথভাবে এ পুরস্কার আয়োজন করে। এটি এই পুরস্কারের ২৩তম আয়োজন।

ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি বাংলাদেশে শিল্প রূপান্তরের প্রতীক হয়ে উঠেছে। একসময় পুরোপুরি আমদানিনির্ভর ইলেকট্রনিক্স বাজারকে তারা রূপ দিয়েছে স্থানীয় উৎপাদনের সমৃদ্ধ কেন্দ্রে।

২০০০-এর দশকের শুরুর দিকে বাবার অনুপ্রেরণায় এস এম শামসুল আলম ও তার ভাইদের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত ওয়ালটন শুরু থেকেই একটি স্বপ্নকে বুকে ধারণ করেছিল—কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও আমদানিনির্ভরতা কমিয়ে জাতিকে সেবা দেওয়া।

শুরুর দিকে দক্ষ প্রকৌশলী ও কারিগরি জ্ঞানের অভাবের মতো চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিল ওয়ালটন। তবে তারা কর্মী প্রশিক্ষণে বড় অংকের বিনিয়োগ করে, আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের নিয়ে আসে স্থানীয় সক্ষমতা গড়ে তুলতে।

২০০৮ সালে ওয়ালটন স্থানীয়ভাবে ফ্রিজ ও গৃহস্থালি যন্ত্রপাতি উৎপাদন শুরু করে, যা বিদেশি ব্র্যান্ড-নিয়ন্ত্রিত বাজারে ছিল যুগান্তকারী উদ্যোগ।

ধীরে ধীরে ওয়ালটন পণ্যের পরিসর বাড়িয়েছে। তাদের উৎপাদিত পণ্যের মধ্যে রয়েছে টেলিভিশন, স্মার্টফোন, মোটরসাইকেল, কমপ্রেসর ও লিফট।

বর্তমানে তারা দেশীয় চাহিদার ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ পূরণ করছে এবং নিজস্ব ব্র্যান্ড নামে ৫০টিরও বেশি দেশে পণ্য রপ্তানি করছে। এর ফলে ইলেকট্রনিক্সে 'মেড ইন বাংলাদেশ' হয়ে উঠেছে আস্থার প্রতীক।

ওয়ালটনের কৌশলগত সমন্বয় ও সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্যের প্রাপ্যতা মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে আকৃষ্ট করেছে। ফলে টিভি ও ফ্রিজ এখন দেশের ঘরে ঘরে অপরিহার্য পণ্য।

ওয়ালটনের এই সাফল্য পোশাক খাত ছাড়াও অন্যান্য শিল্পে বৈচিত্র্য আনতে সাহায্য করেছে। এর ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে কর্মসংস্থান, স্থানীয় সাপ্লাইচেইন ও দক্ষতা উন্নয়নে।

সামষ্টিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ ও দেশীয় মুদ্রার অবমূল্যায়নের কারণে মুনাফা কমে গেলেও ওয়ালটন স্থিতিশীল রয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে তাদের বিক্রি হয়েছে ৪ হাজার ৫৯৭ কোটি টাকার পণ্য। এক হাজারের বেশি প্রকৌশলী নিয়ে গঠিত শক্তিশালী গবেষণা ও উন্নয়ন দল তাদের উদ্ভাবনকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে।

আজ ওয়ালটন কেবল বাংলাদেশের বাজারে শীর্ষ প্রতিষ্ঠান নয়, বরং একটি সাংস্কৃতিক শক্তি—যা স্থানীয় প্রযুক্তি সম্পর্কে মানুষের মানসিকতা বদলে দিয়েছে। তারা প্রমাণ করেছে, বাংলাদেশি কোম্পানিগুলো বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারে। তাদের যাত্রা প্রতিফলিত করে এক 'পরিবর্তনের হাওয়া'—যা বাংলাদেশের শিল্প ভবিষ্যৎকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করার দৃঢ় প্রয়াস।

Comments

The Daily Star  | English

Khaleda Zia’s body taken to Parliament Complex ahead of janaza

Janaza will be held at Manik Mia Avenue at 2pm

2h ago