রাইট ভ্রাতৃদ্বয়ই কি প্রথম আকাশে উড়েছিলেন? 

রাইট ভ্রাতৃদ্বয়ই কি প্রথম আকাশে উড়েছিলেন?
ছবি: সংগৃহীত

পাখিরা ডানা মেলে উড়তে পারলেও মানুষের কাছে সেই স্বপ্ন ছিল অধরাই। তাই বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন সুপারহিরোদের আমরা দেখি উড়ে বেড়াতে। 

তবে নিজে না পারলেও মানুষের আকাশে ওড়ার সাধ পূর্ণ হয়েছিলো উড়োজাহাজের মাধ্যমে। আর সেই স্বপ্ন সফল হয়েছিলো ২ ভাই উইলবার রাইট ও অরভিল রাইটের মাধ্যমে। 

পাখিরা ডানাকে যেমন কৌণিক অবস্থানে রেখে ওড়ে, তেমনভাবে কোণ তৈরি করেছিলেন তারা। ১৯০৩ সালের ডিসেম্বর মাসে ৫৯ সেকেন্ডের এক সফল ফ্লাইট সম্পন্ন করেন তারা। নাম লিখিয়ে নেন ইতিহাসের পাতায়।  

রাইট ভ্রাতৃদ্বয়। ছবি: ইউকিপিডিয়া

তবে এই স্বপ্ন যে প্রথম তারাই দেখেছিলেন এমন কিন্তু নয়। এর আগেও আকাশে ওড়ার চেষ্টা করেছেন আরও কিছু মানুষ। 

অটো লিলিয়েনথাল

জার্মান এই ভদ্রলোকের জন্ম ১৮৪৮ সালে। তার 'বার্ডফ্লাইট অ্যাজ দ্য বেসিস অব অ্যাভিয়েশন' (১৮৮৯) বইটি রাইট ভাতৃদ্বয়কে অণুপ্রেরণা যুগিয়েছিল। এখান থেকেই পাখিদের ওড়ার কৌশল ও কোণের ধারণা পান তারা। 

লিলিয়েথাল নিজেও ফ্লায়িং মেশিন বানিয়েছিলেন, সেগুলো উড়োজাহাজ ছিলো না, ছিলো গ্লাইডার। এমন ১৬টির মতো গ্লাইডারে করে ২০০০ এরও বেশি বার উড়েছিলেন৷ 

তবে গ্লাইডারগুলো ছিলো কাঠ ও তুলোর তৈরি, যা ছিলো ভঙ্গুর। আর তাই শেষপর্যন্ত লিলিয়েনথালের জন্য ডেকে আনে নির্মম পরিণতি। ১৮৯৫ এর আগস্টে দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি।


 
নিজের তৈরি গ্লাইডার নিয়ে আরোহণের প্রাক্কালে অটো লিলিয়েনথাল, ছবি: সংগৃহিত 

বেলুন প্রাণিরা 

১৭৮৩ সালের সেপ্টেম্বরে জ্যাক মন্টগোলফাইয়ার ও তার ভাই জোসেফ মাইকেল বিশাল এক বেলুনে করে ৩টি প্রাণিকে (ভেড়া, মোরগ ও হাঁস) আকাশভ্রমণে পাঠান। 

সে বছরই ২ জন মানুষ নিজেদের থাকা হাইড্রোজেন বেলুনে করে আধাঘণ্টার জন্য আকাশ ভ্রমণে যান। নিকোলাস লুইস রবার্ট ও জ্যাক আলেক্সান্ডার চার্লস নামের সেই ২ জন মানুষ সফলভাবেই অবতরণ করেন। 

কাজেই, রাইট ভাতৃদ্বয় যে প্রথম আকাশে ওড়েননি তা সত্য; একই সঙ্গে এটিও সত্য যে, উড়োজাহাজ তৈরির প্রথম স্বপ্নটি তারাই দেখিয়েছেন। 
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকার ব্যাপক সাহায্যার্থে এসেছিল উড়োজাহাজের এই ধারণা। ১৯১৯ সালের জুনে প্রথম 'ট্রান্সআটলান্টিক' ফ্লাইট তৈরি হয়।

ক্যাপ্টেন স্যার জন আলকক ও লেফটেন্যান্ট স্যার আর্থার হুইটেন ব্রাউন নিয়েছিলেন সেন্ট জন'স, নিউ ফাউন্ডল্যান্ড থেকে কান্ট্রি গালওয়ে পর্যন্ত এই ফ্লাইটটি৷ সব মিলিয়ে সময় লেগেছিল ১৬ ঘণ্টা ২৮ মিনিট। 

উইলবার রাইট মারা যান ১৯১২ সালে। তার সৌভাগ্য হয়নি এটি দেখার। অরভিল বেঁচে ছিলেন ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত। নিজেরা এতটা পথ উড়তে পারেননি, তবে জীবদ্দশায় তিনি দেখে যেতে পেরেছিলেন উড়োজাহাজের সাফল্য।

 

তথ্যসূত্র: রিপলি'স বিলিভ ইট অর নট
গ্রন্থনা: মাহমুদ নেওয়াজ জয় 

 

Comments

The Daily Star  | English

Blood Moon 2025: Dhaka witnesses total lunar eclipse

Astronomy enthusiasts and skywatchers gathered on rooftops and open spaces to witness the rare spectacle

1h ago