বিসিবি নির্বাচন: পাঁচ কাউন্সিলর ‘নিখোঁজ’, দাবি এক প্রার্থীর

BCB

বহুমুখী কারণে বিসিবি (বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড) নির্বাচন ক্রমশ উত্তপ্ত হচ্ছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)'র পর্যবেক্ষণে থাকা ১৫টি ক্লাবের বিরুদ্ধে একটি রিট জারি করা হয়েছে। এরমধ্যে সন্ধ্যায় আরও একটি খবর প্রকাশ পায়। রাজশাহীর কাউন্সিলর ও প্রার্থী মোহাম্মদ হাসিবুল আলম জানিয়েছেন পাঁচজন কাউন্সিলর নিখোঁজ, যারা  বিসিবি'র পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচনে প্রার্থী নন কিন্তু ভোটার।

বিসিবি কাউন্সিলর মোহাম্মদ হাসিবুল আলমের মনোনয়নপত্র সোমবার নির্বাচন কমিশন (ইসি) বাতিল করে দেয়, কারণ সমর্থক কাউন্সিলরের স্বাক্ষর মেলেনি। মঙ্গলবার আপিলের পর, মনোনয়নপত্রে থাকা সমর্থক স্বাক্ষরকারীর স্বাক্ষর বৈধ বলে বিবেচিত হওয়ায় ইসি হাসিবুলের মনোনয়নপত্র গ্রহণ করে।

হাসিবুল সংবাদমাধ্যমকে বলেন, 'আমার মনোনয়ন বাতিলের কারণ ছিল সমর্থক কাউন্সিলরের স্বাক্ষরটি তার আইডি কার্ডের সঙ্গে মেলে। কিন্তু তারা [ইসি] বলেছিল, এটি কাউন্সিলর মনোনয়নের সময় দেওয়া স্বাক্ষরের সঙ্গে মিলতে হবে। আমি খুশি যে তারা আমাকে ন্যায়বিচার দিয়েছে, তবে রাজশাহী থেকে ভালো ভোট পাবো বলে আমি খুব বেশি আশাবাদী নই। কারণ, ২৭ তারিখে আমি যখন আমার মনোনয়ন তুলেছিলাম, তখন দেখলাম আমাদের পাঁচজন কাউন্সিলর জনাব বুলবুলের রুম থেকে বের হচ্ছেন। সেই সময় একজনের কাছ থেকে আমি সমর্থক স্বাক্ষর নিয়েছিলাম এবং সে আমার পরিচিত হওয়া সত্ত্বেও স্বাক্ষরটি পেতে আমাকে বেশ বেগ পেতে হয়েছিল।'

হাসিবুলের সঙ্গে মঙ্গলবার ঢাকা থেকে এস এম আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ রেদওয়ানেরও মনোনয়নপত্র গৃহীত হয়। হাসিবুল জানান, ফর্ম জমা দেওয়ার দিন, অর্থাৎ ২৮ তারিখে বিসিবি প্রাঙ্গণ ছেড়ে যাওয়ার পর থেকে তিনি ওই পাঁচজন কাউন্সিলরকে আর দেখেননি।

তিনি বলেন, 'পাঁচজন কাউন্সিলর এক সঙ্গে একটি সাদা মাইক্রোবাসে করে চলে যান এবং সেই মুহূর্ত থেকে তাদের সবার মোবাইল ফোন বন্ধ। আমি তাদের সঙ্গে কোনোভাবেই যোগাযোগ করতে পারছি না। তাই আমার মনে হচ্ছে, রাজশাহী থেকে আমি সুষ্ঠু ভোটিং পাব না। কারণ, পাঁচজন কাউন্সিলর যদি ফোন বন্ধ করে কোথাও থাকেন, তাহলে আমি কীভাবে অনুভব করব যে নির্বাচনটি সুষ্ঠু হচ্ছে?'

'আমি এই বিষয়ে ইসিকে জানিয়েছি এবং তারা আমাকে একটি কাগজ দেয় এবং আমি লিখিতভাবে জানাই যে আমি স্বাক্ষরকারীকে আনতে বা তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি। আমি তার বাড়িতে গিয়েছিলাম কিন্তু তিনি সেখানে ছিলেন না, কর্মস্থলেও ছিলেন না। ২৭ তারিখ থেকে কাউন্সিলরদের এক জায়গায় জড়ো করা হয়েছে এবং এমনকি তাদের পরিবারও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছে না। আমি আমার স্বাক্ষরকারীকে খুঁজতে নাটোর গিয়েছিলাম এবং তার পরিবার তার জন্য কাঁদছিল, তাই এই নির্বাচনকে ঘিরে ভিন্ন এক পরিস্থিতি বিদ্যমান।'

'আমি চাই যে লুকিয়ে থাকা কাউন্সিলরদের খুঁজে বের করার যদি কোনো উপায় থাকে, তাহলে আমি সরকার বা মিডিয়াকে তাদের প্রকাশ্যে নিয়ে আসার অনুরোধ জানাবো, যাতে আমরা ভোট চাইতে পারি। না হলে আমরা কীভাবে ভোট চাইব? শুধু পরিচালকদের প্রার্থীরা এখানে আছেন, কিন্তু সেই পাঁচজন কাউন্সিলর নেই। ২৮ তারিখে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় আমি তাদের শেষ দেখেছিলাম, কিন্তু তাদের সাথে কথা বলিনি।' তিনি জানান।

হাসিবুল আরও উল্লেখ করেন যে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের একজন কাউন্সিলর এই নিখোঁজ কাউন্সিলরদের ঘটনার পেছনে আছেন, 'মখলেসুর রহমান, যিনি নবাবগঞ্জের, তিনি এই কাজগুলো করছেন।'

স্বাভাবিকভাবেই, প্রশ্ন আসে, যদি স্বাক্ষরকারী নিখোঁজই হন, তবে ইসি কীভাবে স্বাক্ষরটি বৈধতা দিল?

দ্য ডেইলি স্টার বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনার, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করে।

তিনি নিশ্চিত করেন যে হাসিবুলের ফর্মের স্বাক্ষরটি অন্য একজন প্রার্থীকে দিয়ে বৈধতা দিতে হয়েছিল, যিনি মঙ্গলবার ব্যক্তিগতভাবে শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন না।

মোহাম্মদ হোসেন দ্য ডেইলি স্টার-কে বলেন, 'তার স্বাক্ষরকারী আসেননি, তবে আমরা তাদের ফর্মগুলো পরীক্ষা করেছি, সেই ব্যক্তির ভোটার আইডি কার্ডের স্বাক্ষরের সঙ্গে মিলে যায়। তার নাম মখলেসুর [রহমান রনি] এবং তিনি যে হাসিবুলের ফর্মে স্বাক্ষর করেছেন, তার সাক্ষী ছিলেন অন্য একজন প্রার্থী এবং কাউন্সিলর। এই প্রার্থীর বিরুদ্ধে একটি আপিল থাকায় আজ তার শুনানি ছিল, কিন্তু তিনি আজ এখানে আসতে পারেননি এবং আমরা তার সঙ্গে একটি জুম মিটিংয়ে কথা বলেছি। তিনি নিশ্চিত করেছেন হাসিবুলের ফর্ম তার সামনেই স্বাক্ষরিত হয়েছিল।'

Comments

The Daily Star  | English

Hasina can’t evade responsibility for Khaleda Zia’s death: Nazrul

In 2018, Khaleda walked into jail, but came out seriously ill, he says

3h ago