বিসিবি নির্বাচন বর্জনের হুমকি ঢাকার বেশ কয়েকটি ক্লাবের

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন ঘিরে আবারও এলো নেতিবাচক খবর। ৬ অক্টোবরের নির্বাচনে ১৫টি ক্লাবকে অন্তর্ভুক্ত করার বিরুদ্ধে সাবেক সভাপতি ফারুক আহমেদের রিট পিটিশনের উপর হাইকোর্ট বেঞ্চের স্থগিতাদেশ নিয়ে মঙ্গলবার অনেক ক্লাব কাউন্সিলর তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এবং তারা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর হুমকিও দিয়েছেন।
ইন্দিরা রোড ক্রীড়া চক্রের কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম বাবু দ্য ডেইলি স্টার-কে বলেন, 'ক্লাবগুলোর বিরুদ্ধে এমন ষড়যন্ত্র দেখতে পাওয়াটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। এমন ঘটনা তিন-চারবার ঘটেছে। নির্বাচন কমিশনও বিষয়টি অনুমোদন করেছিল, তবুও বিষয়টি আদালতে গড়িয়েছে।'
তিনি আরও যোগ করেন, 'রিটের পেছনে মূল কারণ হলো নির্বাচনে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকা।'
বাবু আরও নিশ্চিত করেন যে তারা পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে মঙ্গলবার রাতে ৭৬টি ক্লাবের সংখ্যাগরিষ্ঠের সঙ্গে একটি বৈঠকে বসতে প্রস্তুত। সেই বৈঠকের পরই নির্বাচন বর্জন করার ঘোষণা আসতে পারে।
প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা বুধবার দুপুর ২টায় ঘোষণা করা হবে, আর অনুমোদিত মনোনীত প্রার্থীরা একই দিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে তাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে পারবেন।
তিনি আরও বলেন, 'আমরা সম্মিলিতভাবে একটি সিদ্ধান্ত নেব। আজ রাতে আমাদের বৈঠক আছে। এই ঘটনায় সবাই ক্ষুব্ধ এবং আমার মনে হয় সবাই নির্বাচন থেকে তাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেবেন।'
জানা যায়, সোমবার রাতে আমিনুল ইসলাম বুলবুলের নেতৃত্বাধীন প্যানেল এবং তামিম ইকবালের নেতৃত্বাধীন প্যানেলের মধ্যে পারস্পরিক সমঝোতা না হওয়ায় এই নতুন মোড় আসে। এর ফলস্বরূপ, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এর তদন্তাধীন থাকা ১৫টি ক্লাবকে অন্তর্ভুক্ত করার বিরুদ্ধে ফারুক আহমেদ রিট পিটিশন দায়ের করেন।
ভেতরের খবর অনুযায়ী, এই ১৫টি ক্লাবই তামিম-নেতৃত্বাধীন প্যানেলের ভোট ব্যাংক হিসেবে পরিচিত।
খসড়া তালিকায় অনুপস্থিত থাকা, কিন্তু পরে ইসি শুনানির পর চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় যুক্ত হওয়া এই ১৫টি ক্লাব এখন নির্বাচনের দিনের আগে আপিল করার জন্য সময়ের বিরুদ্ধে লড়ছে। ছুটি এবং আদালত বন্ধের কারণে এখন শুধু বিশেষ ব্যবস্থাই তাদের একমাত্র ভরসা।
এই স্থগিতাদেশের কারণে অ্যাক্সিওম ক্রিকেটার্স-এর ইসরাফিল খসরু এবং ভাইকিংস ক্রিকেট একাডেমির ইফতেখার রহমান মিঠুও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না, যদিও তারা দুজনেই ক্যাটাগরি-২ এর অধীনে মনোনয়ন ফরম কিনেছিলেন, যেখান থেকে ১২ জন পরিচালক নির্বাচিত হবেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কাউন্সিলর দ্য ডেইলি স্টার-কে বলেন, 'আমি যতদূর জানি, বিপরীত প্যানেল ক্লাব ক্যাটাগরি থেকে তিন থেকে পাঁচজন পরিচালক পেতে চায়। তবে, তামিম পুরো প্যানেল নিয়ে লড়তে চান এবং সেই প্রস্তাবে রাজি হননি।'
এদিকে, পরিচালক পদের জন্য মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়া মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের কাউন্সিলর মাসুদুজ্জামানও তার মনোনয়ন প্রত্যাহারের ইঙ্গিত দিয়েছেন।
তিনি বলেন, 'আমার ভালো লাগছে না এবং আমাদের সঙ্গে যা ঘটেছে, তারপর আমার মনে হয় না এটি ক্রিকেটের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ, তাই আমি হয়তো নির্বাচনে অংশ নেব না। গত বোর্ড মিটিংয়ের পর এই বোর্ডের মেয়াদ শেষ হয় এবং নতুন বোর্ডের কথা ভেবে অনেক আশা নিয়ে আমি মনোনয়ন ফরম নিয়েছিলাম। কিন্তু গত দেড় মাস ধরে যা হচ্ছে, তা এখনও চলছে।'
মাসুদুজ্জামান আরও যোগ করেন, 'দেখুন, ১৫টি ক্লাবকে প্রথমে বৈধতা দেওয়া হয়েছিল, তারপর সেটা চ্যালেঞ্জ করা হলো এবং এখন তাদের বাতিল করা হচ্ছে। এই বিষয়গুলো বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য কোনো ভালো কিছু বয়ে আনবে না। আমরা এখানে কিছু নিতে আসিনি, বরং দিতে এসেছি। আমরা অপমানিত হতে আসিনি। তাই আমার মনোনয়ন ফরম প্রত্যাহার করার সম্ভাবনা রয়েছে।'
Comments