নিজেদের মেলে ধরার তৃপ্তি জাকেরের

এশিয়া কাপ ব্যর্থতার রেশ থাকতেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ খেলতে নামায় চাপে ছিলেন জাকের আলি অনিকরা। নিয়মিত অধিনায়ক লিটন দাসের অনুপস্থিতিতে ছন্দহীন জাকেরকে নিয়েও ছিলো প্রশ্ন। তবে শেষ পর্যন্ত শারজার মাঠে রশিদ খানদের সিরিজে হারিয়ে দিয়েছেন তারা, এই সাফল্যকে নিজেদের মানসিকতা মেলে ধরার প্রমাণ হিসেবে দেখছেন তিনি।
প্রথম ম্যাচে চার উইকেটে জয়ের পর শুক্রবার দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ জেতে ২ উইকেটে। সিরিজে জিতে যায় ২-০ ব্যবধানে।
আগের দিন দুই ওপেনার আশি ভাগ কাজ করে দেওয়ার পর ধস নেমেছিলো, এদিন শুরুতেই চাপে পড়ে উদ্ধার হয় বাংলাদেশ। ১৪৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পাওয়ার প্লেতেই পড়ে ৩ উইকেট। তবে নুরুল হাসান সোহানের অপরাজিত ২১ বলে ৩১ এবং দশ নম্বরে নামা শরিফুল ইসলামের ক্যামিও শেষ ওভারে জয় এনে দেয়।
ম্যাচ শেষে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়কের মুখে তৃপ্তির হাসি, 'ভালো লাগছে। দল হিসেবে আমরা শেষ দুই ম্যাচে দারুণ খেলেছি এবং আজ আমরা আরও গোছানো ছিলাম। বোলাররা শুরুতে টোন সেট করেছে, উইকেটটা গতকালের চেয়ে ভালো ছিল এবং আমরা ভালো ক্যারেক্টার শো করেছি।'
আফগানিস্তানের ওপেনাররা ভালো সূচনা করলেও, বাংলাদেশের বোলাররা নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখে এবং তাদের ৫ উইকেটে ১৪৭ রানে আটকে দেয়। শরিফুল বল হাতেও দুর্দান্ত ছিলেন, ৪ ওভারে ১ উইকেট তুলে মাত্র ১৩ রান দেন, পরে ব্যাট হাতে নেমে ম্যাচ জেতান। শেষ ওভারের প্রথম বলেই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে তাঁর ৬ বলে ১১ রানের ইনিংস বাংলাদেশকে জয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়।
ম্যাচ সেরা হয়ে শরিফুল বলেন, 'উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য ভালো ছিল। আমি শুধু চেষ্টা করেছি অনুশীলনে যা করেছি তাই করতে। যখন ব্যাটিংয়ে নামি, নুরুল আমাকে বলেছিল যেন উইকেট না ছুঁড়ে দিই, তাই ফুল লেংথ বলগুলো কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি।'
বাংলাদেশের রান তাড়া শুরু হয় ধাক্কা দিয়ে। তানজিদ তামিম (২), পারভেজ হোসেন এবং সাইফ হাসান (১৮) পাওয়ারপ্লের মধ্যেই আউট হয়ে গেলে ২৪ রানে ৩ উইকেটে পড়ে যায়। সাইফের প্রতিশ্রুতিশীল ইনিংস শেষ হয় মুজিব উর রহমানের বলে সেদিকুল্লাহ আতলের দুর্দান্ত ক্যাচে।
শামীম হোসেন ও জাকের ৫৬ রানের জুটি গড়ে আশা জাগান। শামীম সাহসী ভঙ্গিতে রশিদ খানের মোকাবিলা করেন, আর জাকের খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এদিন বাউন্ডারি আনেন। তবে রশিদের গুগলিতে জাকের(২৫ বলে ৩২) ১১তম ওভারে এলবিডব্লিউ হয়ে যান। শামীমের সুইচ হিট নুর আহমেদের বিপক্ষে ১৫তম ওভারে ব্যর্থ হলে বিদায় হয় তার (৩৩ রান)।
চেজ আবারও চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ যখন রশিদ নাসুম আহমেদকেও (১০) আউট করেন। আজমতউল্লাহ ওমরজাই ১৮তম ওভারে সাইফউদ্দিন ও রিশাদ হোসেনকে ফিরিয়ে দিলে আফগানদের সম্ভাবনাই বেড়ে গিয়েছিলো।
শেষ দুই ওভারে ১৯ রান প্রয়োজন ছিল। সোহান নুরকে ছক্কা মেরে সমীকরণ সহজ করে দেন। শেষ মুহূর্তে শরিফুলও স্নায়ুর লড়াই জিতে দুই বল বাকি থাকতে বাংলাদেশকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন।
জাকের বলেন, 'আমাদের সুযোগ নিতে হয়েছে কারণ তারা মানসম্পন্ন স্পিনার। আমরা ইতিবাচক থেকেছি এবং বাউন্ডারির খোঁজ করেছি… এজন্য ছেলেদের কৃতিত্ব দিতে হবে।'
বাংলাদেশের তৃতীয় ও শেষ টি২০আই ম্যাচ আগামী ৫ অক্টোবর একই ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে।
Comments