অ্যাশেজের আগে দুশ্চিন্তায় অস্ট্রেলিয়া

অ্যাশেজ সামনে রেখে অস্ট্রেলিয়া শিবিরে নেমে এসেছে অনিশ্চয়তার ছায়া। দিন যত গড়াচ্ছে, ততই ক্ষীণ হচ্ছে অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের ফিট হয়ে ওঠার সম্ভাবনা। তার অনুপস্থিতি মানে শুধু একজন বোলারের হার নয়, বরং নেতৃত্ব, কৌশল ও আত্মবিশ্বাসে বড় এক ধাক্কা। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মর্যাদার লড়াইয়ে 'আর্ন' ধরে রাখার অভিযানে আনতে হতে পারে বড় রদবদল।

পিঠের স্ট্রেস ইনজুরি এখন কামিন্সের সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ। ২১ নভেম্বর পার্থে শুরু হতে যাওয়া প্রথম টেস্টের আগে এখনো বল হাতে নিতে পারেননি তিনি। কেবল প্রথম টেস্ট থেকেই যদি কামিন্স ছিটকে যান, সেটিই হবে অস্ট্রেলিয়ার জন্য বিশাল ধাক্কা, কারণ ২০১৭-১৮ মৌসুমে অ্যাশেজ অভিষেকের পর থেকে তিনি প্রায় প্রতিটি সিরিজেই ছিলেন দলের অপরিহার্য অংশ।

চারটি অ্যাশেজ অভিযানে এখন পর্যন্ত কামিন্স মিস করেছেন মাত্র একটি ম্যাচ, ২০২১ সালে অ্যাডিলেড টেস্ট। যেখানে এক কোভিড-সংক্রমিত ব্যক্তির সঙ্গে একই রেস্টুরেন্টে খাওয়ার কারণে তাকে সাইডলাইনে থাকতে হয়েছিল।

এমন ধারাবাহিকতায় তিনি সংগ্রহ করেছেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৯১ উইকেট, গড় ২৪.১০। যা তাকে তার দুই সহযোদ্ধা জশ হ্যাজলউড ও মিচেল স্টার্কের চেয়ে এগিয়ে রেখেছে। কামিন্স ফিট ও ফর্মে থাকলে ২০১৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত একবারও 'আর্ন' হারায়নি অস্ট্রেলিয়া।

'যদি কামিন্স পার্থ টেস্টে না খেলেন, তাহলে এটি সিরিজের জন্যই খারাপ, অস্ট্রেলিয়ার জন্যও খারাপ, কিন্তু ইংল্যান্ডের জন্য হবে বিশাল প্রেরণা। কারণ তারা এক দশকেরও বেশি সময় ধরে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট জয়ের স্বাদ পায়নি,' দ্য টাইমসে লিখেছেন সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক মাইকেল আথারটন।

কামিন্সের অনুপস্থিতিতে পেস ইউনিটে প্রথম বিকল্প হিসেবে এগিয়ে থাকবেন স্কট বোল্যান্ড। তবে তখন সামনে আসবে আরেক বড় প্রশ্ন, ৩৫ বছর বয়সী স্টার্ক এবং ৩৪ বছর বয়সী হ্যাজলউডকে পুরো পাঁচ ম্যাচের সিরিজে কীভাবে সামলানো হবে। গত গ্রীষ্মে ভারতের বিপক্ষে পুরো পাঁচটি টেস্ট খেলে গেছেন স্টার্ক, কিন্তু হ্যাজেলউড ২০১৭-১৮ সালের পর আর কখনো পুরো অ্যাশেজ সিরিজ খেলতে পারেননি ইনজুরির কারণে।

এদিকে তরুণ অলরাউন্ডার ক্যামেরন গ্রিনের ওপরও থাকবে বাড়তি চাপ। ফ্রন্টলাইন পেসারদের ওয়ার্কলোড কমানো এবং একই সঙ্গে নিজেকে ধীরে ধীরে ফিরিয়ে আনা, কারণ কিছুদিন আগেই তিনি পিঠের অস্ত্রোপচার শেষে বোলিংয়ে ফিরছেন।

নেতৃত্বের দিক থেকেও বড় পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে। কামিন্স অনুপস্থিত থাকলে দায়িত্ব পড়বে সহ-অধিনায়ক স্টিভ স্মিথের কাঁধে, যিনি আগেও কামিন্সের বদলি হিসেবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই টেস্টে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

তবে সেটিও হবে এক বড় মানসিক রূপান্তর। কারণ ২০১৮ সালের কুখ্যাত বল-টেম্পারিং কেলেঙ্কারির পর পূর্ণকালীন নেতৃত্ব হারানো স্মিথের প্রত্যাবর্তন মানে হবে এমন এক দলকে নতুনভাবে চালনা করা, যারা অভ্যস্ত হয়ে গেছে কামিন্সের ঠাণ্ডা মাথার নেতৃত্বে, স্থিতিশীলতায় ও নির্ভরযোগ্যতায় ভরসা রাখতে।

Comments