ইয়ামালকে অপেক্ষায় রেখে ব্যালন ডি'অর জিতলেন দেম্বেলে

ছবি: ব্যালন ডি'অর এক্স

ফরাসি উইঙ্গার উসমান দেম্বেলে ব্যালন ডি'অর জিতবেন— এমন গুঞ্জন ছিল জোরেশোরে। শেষমেশ সেটাই সত্যি হলো। ঐতিহাসিক একটি মৌসুম কাটানো পিএসজির হয়ে অনবদ্য পারফরম্যান্সের স্বীকৃতি পেলেন তিনি। বার্সেলোনার লামিন ইয়ামালকে পেছনে ফেলে প্রথমবারের মতো বর্ষসেরা ফুটবলার হলেন দেম্বেলে।

আজ সোমবার দিবাগত রাতে প্যারিসের ঐতিহাসিক থিয়াত্র দ্যু শাতলেতে জমকালো আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে ব্যালন ডি'অরের ৬৯তম আসর। ২৮ বছর বয়সী দেম্বেলের হাতে ট্রফি তুলে দেন ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি রোনালদিনিয়ো।

দেম্বেলের উদযাপনের মুহূর্তটির সাক্ষী হতে পারেননি পিএসজি কোচ লুইস এনরিকে ও সিংহভাগ ক্লাব সতীর্থ। গতকাল রোববার রাতে মার্সেইয়ের বিপক্ষে মাঠে নামার কথা থাকলেও বাজে আবহাওয়ার কারণে লিগ ওয়ানের ম্যাচটি পিছিয়ে আজ রাতে নেওয়া হয়। ঊরুর চোটে ভুগতে থাকায় দেম্বেলে খেলতে পারেননি বলে আসেন ব্যালন ডি'অর অনুষ্ঠানে। তবে উপস্থিত ছিলেন পিএসজি সভাপতি নাসের আল খেলাইফি।

ছবি: এএফপি

গত ২০২৪-২৫ মৌসুমে পিএসজির উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের অধরা শিরোপা জয়ে দেম্বেলে রাখেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। প্যারিসিয়ানদের হয়ে মোট চারটি ট্রফি উঁচিয়ে ধরেন তিনি। আরও জেতেন ফরাসি লিগ ওয়ান, ফরাসি কাপ ও ফরাসি সুপার কাপ। এছাড়া, ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠলেও চেলসির কাছে হেরে রানার্সআপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয় পিএসজিকে।

সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে পিএসজির জার্সিতে দেম্বেলে খেলেন ৫৩ ম্যাচ। নিজে ৩৫ গোল করার পাশাপাশি সহায়তা করেন আরও ১৬ গোলে। ব্যালন ডি'অরের লড়াইয়ে তার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ১৮ বছরের স্প্যানিশ উইঙ্গার ইয়ামালও ছিলেন অসাধারণ ছন্দে। বার্সার হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৫৫ ম্যাচে ১৮ গোল ও ২৫ অ্যাসিস্ট করেন তিনি। তার ক্লাব জেতে স্প্যানিশ লা লিগা, কোপা দেল রে ও স্প্যানিশ সুপার কাপের শিরোপা।

মেয়েদের বিভাগে টানা তৃতীয়বারের মতো ব্যালন ডি'অর জিতে ইতিহাস গড়েছেন আইতানো বনমাতি। প্রথম নারী ফুটবলার হিসেবে এই কীর্তি লিখেছেন বার্সেলোনার স্প্যানিশ মিডফিল্ডার। তিনি ছাড়িয়ে গেছেন দুবার বর্ষসেরা হওয়া ক্লাব ও জাতীয় দলের সতীর্থ ফুটবলার আলেক্সিয়া পুতেয়াসকে।

গত মৌসুমে বার্সেলোনা নারী দলের হয়ে ঘরোয়া ট্রেবল জেতেন ২৭ বছর বয়সী বনমাতি। তবে কাতালানদের হয়ে উয়েফা নারী চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও স্পেনের হয়ে নারী ইউরোর ফাইনালে উঠলেও হেরে যান। তা সত্ত্বেও নজরকাড়া পারফরম্যান্সের সুবাদে তিনি উভয় প্রতিযোগিতার সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন। ব্যালন ডি'অরের লড়াইয়ে বনমাতি পেছনে ফেলেন আর্সেনালে খেলা স্বদেশি মারিয়োনা কালদেন্তেকে।

ছবি: এএফপি

ব্যালন ডি'অর হলো 'ফ্রান্স ফুটবল' নামক ফরাসি ম্যাগাজিনের দেওয়া বার্ষিক পুরস্কার। ১৯৫৬ সাল থেকে এটি দেওয়া হচ্ছে। আগের মৌসুমে সেরা পারফর্ম করা ফুটবলারকে এই সম্মাননা দেওয়া হয়। ব্যক্তিগত পর্যায়ে এটি ফুটবলের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার। পুরস্কারজয়ীদের নিয়ে নানা সময়ে তর্ক-বিতর্ক উঠলেও ব্যালন ডি'অরের আবেদন এখনও অটুট রয়েছে।

ফ্রান্স ফুটবল আর ফরাসি দৈনিক লেকিপ— এই দুটির সাংবাদিকরা মিলে শুরুতে ৩০ জন ফুটবলারের সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরি করেন। এরপর হয় ভোটগ্রহণ। ২০২২ সাল থেকে চলমান নিয়ম অনুসারে, সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রকাশের আগে ছেলেদের বিভাগে ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ একশ ও মেয়েদের বিভাগে শীর্ষে পঞ্চাশে থাকা দেশগুলোর একজন করে সাংবাদিক ভোট দিতে পারেন। সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়া খেলোয়াড়ের হাতে ওঠে বর্ষসেরার ট্রফি।

ব্যালন ডি'অর দেওয়ার ক্ষেত্রে আগে ক্লাব ও জাতীয় দলের হয়ে এক বর্ষপঞ্জির পারফরম্যান্স বিবেচনায় নেওয়া হতো। এখন বিবেচনা করা হয় ইউরোপিয়ান ফুটবলের একটি মৌসুমকে। এবারের জন্য সময়সীমা ছিল ২০২৪ সালের ১ আগস্ট থেকে চলতি বছরের ১৩ জুলাই পর্যন্ত।

Comments

The Daily Star  | English

Hasina can’t evade responsibility for Khaleda Zia’s death: Nazrul

In 2018, Khaleda walked into jail, but came out seriously ill, he says

7h ago