দক্ষিণ এশিয়ায় 'আধিপত্য বিস্তার' করতে প্রস্তুত বাংলাদেশ: তপু

শেষ পর্যন্ত হংকংয়ের মাঠে অনুষ্ঠিত এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের অ্যাওয়ে ম্যাচে ড্র নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে বাংলাদেশকে। কিন্তু সেটি তাদের যোগ্যতা অর্জনের আশা টিকিয়ে রাখার জন্য যথেষ্ট ছিল না। দেশে ফেরার পথে থাইল্যান্ডে এক সংক্ষিপ্ত বিরতির সময় দলের অধিনায়ক (ভারপ্রাপ্ত) ও ডিফেন্ডার তপু বর্মণ কথা বলেন দ্য ডেইলি স্টারের সাংবাদিক অনিসুর রহমানের সঙ্গে।

আলোচনার কিছু অংশ নিচে তুলে ধরা হলো—

দ্য ডেইলি স্টার: হংকংয়ের বিপক্ষে দলের পারফরম্যান্স আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?

তপু বর্মণ: এমন এক উত্তেজনাপূর্ণ পরিবেশে, পূর্ণ দর্শকে ভরা স্টেডিয়ামে (কাই তাক স্টেডিয়াম), আমরা যেভাবে ম্যাচে আধিপত্য দেখিয়েছি, তা নিয়ে আমরা গর্বিত। বিশেষ করে, দলে অনেক নতুন খেলোয়াড় ছিল, যারা এমন পরিবেশে খেলার অভ্যস্ত নয়। হংকং আসলে গোল করার সুযোগই খুব একটা তৈরি করতে পারেনি, পেনাল্টির সুযোগটা ছাড়া। আমরা তাদের উইং প্লে সফলভাবে থামিয়ে দিয়েছিলাম, ঠিক সেই কৌশলটাই তারা ঢাকায় ব্যবহার করে আমাদের ক্ষতি করেছিল।

ডেইলি স্টার: প্রায় ৫০ হাজার দর্শকের সামনে খেলতে গিয়ে কতটা চাপ অনুভব করেছেন?

তপু: ম্যাচের আগের দিনই আমরা আলোচনা করেছিলাম, স্টেডিয়ামের পরিবেশ কেমন হতে পারে। নিজেদের মনে করিয়ে দিয়েছিলাম, চাপ না নিয়ে এই পরিস্থিতিটা উপভোগ করতে হবে। তবুও মাঠে নির্দেশনা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছিল, কারণ হংকং সমর্থকদের উল্লাসে পুরো স্টেডিয়াম সরব ছিল।

ডেইলি স্টার: ডিফেন্স থেকে বিল্ড-আপ শুরু করতে গিয়ে যে পেনাল্টিটি হলো, সেটি কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন?

তপু: আসলে, আমরা গত তিন বছর ধরেই হাভিয়ের ক্যাবরারের অধীনে বিল্ড-আপ ফুটবল খেলছি। আমি মনে করি, কাল তরিকের (কাজি) ঘটনাটি কেবলই একবারের দুর্ঘটনা ছিল।

ডেইলি স্টার: চতুর্থ ম্যাচডের পর এশিয়ান কাপের দৌড় থেকে ছিটকে যাওয়ার পর দলের মানসিক অবস্থা কেমন?

তপু: ঘরের মাঠে হংকংয়ের কাছে হারটাই আমাদের জন্য বড় ধাক্কা ছিল। আমরা যদি সেই ম্যাচটা জিততে পারতাম, তাহলে পাঁচ পয়েন্ট নিয়ে লড়াইয়ে টিকে থাকতে পারতাম। ব্যক্তিগতভাবে আমি মোট ফলাফল নিয়ে সন্তুষ্ট নই, কারণ দল হিসেবে আমাদের প্রত্যাশা ছিল আরও বেশি।

ডেইলি স্টার: ঘরের মাঠে দুই ম্যাচ হারলেও, অ্যাওয়ে ম্যাচ দুটি ড্র, এই পার্থক্যটা কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন?

তপু: সত্যি বলতে এটা বোঝানো কঠিন। যদি চারটি ম্যাচই দেখেন, প্রায় সব দিক দিয়েই আমরা ভালো অবস্থানে ছিলাম... কিন্তু ঘরের মাঠের ম্যাচগুলোতে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে মনোযোগ হারিয়ে ফেলেছিলাম, আর তারই শাস্তি পেয়েছি। বিপরীতে, অ্যাওয়ে ম্যাচগুলোতে আমরা অনেক বেশি মনোযোগী ছিলাম এবং নিজের সামর্থ্যের চেয়েও ভালো খেলেছি।

ডেইলি স্টার: ভারতের বিপক্ষে এবং সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে বাকি দুই ম্যাচ নিয়ে আপনার ভাবনা কী?

তপু: এখনো পর্যন্ত এই এশিয়ান কাপ অভিযানে আমরা আমাদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারিনি, তবে আমরা আশাবাদী, ভারতের বিপক্ষে (১৮ নভেম্বর) দীর্ঘ প্রতীক্ষিত জয়টা আসবে। পাশাপাশি সিঙ্গাপুরের মাঠেও কিছু পয়েন্ট সংগ্রহ করতে চাই, যাতে আমাদের ফিফা র‌্যাংকিং উন্নত হয়।

ডেইলি স্টার: হামজা চৌধুরী ও শামিত সোমের মতো বিদেশি প্রবাসী খেলোয়াড়দের অন্তর্ভুক্তি দলে আশা জাগালেও জয় আসছে না কেন বলে মনে করেন?

তপু: কোনো সন্দেহ নেই, হামজা ও শামিতের যোগে আমাদের মান অনেক বেড়েছে। তারা উচ্চমানের ফুটবলার এবং দারুণ মানুষও বটে। তবে শেষ পর্যন্ত ফলাফলটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এইবার প্রত্যাশা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি ছিল… আমি বিশ্বাস করি, এখন আমরা দক্ষিণ এশিয়ার যেকোনো প্রতিপক্ষের বিপক্ষেই আধিপত্য দেখাতে সক্ষম।

Comments

The Daily Star  | English

Farewell

Nation grieves as Khaleda Zia departs, leaving a legacy of unbreakable spirit

8h ago