লিভারপুলের সমস্যা আর সাময়িক নয়

অ্যানফিল্ডের রাতটা যেন এক প্রতীকে রূপ নিল, হতাশ মুখে ধীরে ধীরে মাঠ ছাড়ছেন মোহাম্মদ সালাহ, আর তার দল লিভারপুল মরিয়া হয়ে খুঁজছে সমতার গোল। এই দৃশ্য যেন বলেই দিয়, লিভারপুলের সময়টা ভালো যাচ্ছে না।
যে খেলোয়াড় এত বছর ধরে অ্যানফিল্ডের আশা, লড়াই আর জয়ের প্রতীক, সেই 'ইজিপশিয়ান কিং'ই আজ নিজেকে খুঁজে ফিরছেন। লিভারপুলের সাম্প্রতিক সাফল্যের প্রতিটি অধ্যায়ের নায়ক ছিলেন তিনি, অথচ এবার তিনিই হলেন ব্যর্থতার প্রতীক।
হ্যারি ম্যাগুয়ারের ৮৪ মিনিটের হেডে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড যখন ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে যায়, অ্যানফিল্ডে এক দশকেরও বেশি সময় পর প্রথম জয় নিশ্চিত করতে। তখনই সালাহকে তুলে নেন কোচ আরনে স্লট, তার জায়গায় নামানো হয় জেরেমি ফ্রিমপংকে।
এই হারের সঙ্গে লিভারপুলের হারলগে যোগ হলো চতুর্থ পরাজয়, টানা চার ম্যাচ হারা, যা ২০১৪ সালের পর তাদের সবচেয়ে খারাপ ধারা। স্লটের অধীনে শিরোপাজয়ী মৌসুমের পর যেটাকে অনেকে সাময়িক ছন্দপতন ভাবছিলেন, তা এখন পরিণত হয়েছে গভীর সংকটে।
ম্যাচ শেষে স্লট বললেন, 'টানা চার ম্যাচ হারলে অবশ্যই উদ্বেগের কারণ আছে। ফুটবলে আমরা জানি বিষয়গুলো কত দ্রুত বদলায়। তবে যদি আমরা পারফরম্যান্সটা ধরে রাখতে পারি, জেতার সুযোগ আসবে। কিন্তু টানা চার হার দলের ভেতরে প্রভাব ফেলে, এটা নিশ্চিত।'
আগামী বুধবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আইনট্রাখট ফ্রাঙ্কফুর্টের বিপক্ষে যদি আবার হারে লিভারপুল, তাহলে ১৯৫৩ সালের সেপ্টেম্বরের পর প্রথমবার টানা পাঁচ ম্যাচে পরাজয়ের লজ্জায় পড়বে দলটি।
অ্যানফিল্ডের দর্শকরাও ধৈর্য হারাচ্ছিলেন। ধীর গতির আক্রমণ গড়ে তোলা আর গতানুগতিক পাসে বিরক্তি জমছিল গ্যালারিতেও। মনে হচ্ছিল, যেন ভাবনার অভাবেই ভুগছে দলটি।
তবু কিছু দুর্ভাগ্যও ছিল, কোডি গাঁকপো তিনবার পোস্টে লেগে বঞ্চিত হওয়ার পর ৭৮ মিনিটে সমতার গোল দেন। কিন্তু এরপরই হারিয়ে যায় সব উচ্ছ্বাস।
সালাহরও ছিল সোনালী সুযোগ, কিন্তু তার অস্বস্তিকর শটে ফুটে উঠল আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি। ৩৩ বছর বয়সী এই তারকার নন-পেনাল্টি গোলশূন্য ধারাটি এখন টেনে নিয়ে গেছে টানা সাত ম্যাচ পর্যন্ত।
বিশ্বমানের খেলোয়াড়দের নিয়ে সন্দেহ করা ঝুঁকিপূর্ণ, কিন্তু এ মৌসুমে সালাহ যেন নিজ ছায়া হয়ে রয়েছেন। গালাতাসারায়ের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ছিলেন বেঞ্চে, আর অ্যানফিল্ডে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে তাকেই উঠিয়ে নিতে হয়েছে।
Comments