লিটন না থাকাতেই নাকি সব এলোমেলো!

সংবাদ সম্মেলন শেষ করে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন ফিল সিমন্স। হারের ব্যাখ্যা দিতে এসে অধিনায়ক লিটন দাসের না থাকার প্রসঙ্গ টানলেন একাধিকবার। তাহলে কি লিটন না থাকাতেই সব এলোমেলো? জানতে চাইলে শুকনো হাসিতে বাংলাদেশের কোচ বললেন, 'হ্যাঁ, ওর মতন ক্লাসের কেউ আচমকা না থাকলে কঠিন হয়ে যায় পরিস্থিতি।'

পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৩৬ রানের লক্ষ্য ছিলো, ফাইনাল ছিলো একদম নাগালে থাকা স্বপ্ন। সেটা ধূলিসাৎ হয় হতশ্রী ব্যাটিংয়ে। বাংলাদেশের ব্যাটিং যারা দেখেছেন তাদের জন্য নিশ্চিতভাবেই তা ছিলো পীড়াদায়ক।

বাংলাদেশের রান তাড়ায় ছিলো না কোন পরিকল্পনার ছাপ। প্রথম ওভার থেকে অস্থিরতা, আতঙ্ক ভর করে তালগোল পাকিয়েছেন তারা।

শেষ পর্যন্ত ১১ রানে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেয় বাংলাদেশ। হারের ব্যবধান বলছে না ম্যাচের ছবি। শেষ দিকে রিশাদ হোসেন স্রেফ কিছুটা ব্যবধান কমান। না হলে খেলা থেকে তো বেশ আগেই ছিটকে গিয়েছিলো দল।

বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপও ছিলো প্রশ্নবিদ্ধ। ওপেনার তানজিদ হাসান তামিমকে বসিয়ে দলে নেওয়া হয় লোয়ার অর্ডার নুরুল হাসান সোহানকে। যার ব্যাট করার ধরণ, ক্রিজে হাঁসফাঁস অবস্থা দেখিয়েছে দৃষ্টিকটু।

রান তাড়ায় দেখে মনে হয়েছে অহেতুক তাড়াহুড়ো করেছে দল। দেখে মনে হয়েছে খেলাটা তারা তাড়াতাড়ি শেষ করে দিতে চায়। তবে সিমন্সের মনে হচ্ছে পরিকল্পনার অভাব নয়, স্রেফ খারাপ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তারা ব্যাট করার সময়, 'সব দলেরই এরকম দিন আসে। আজ আমাদের দিন ছিলো। শট নির্বাচন ভালো হয়নি।'

তানজিদকে বাদ দেওয়ায় পারভেজ হোসেন ইমন ও সাইফ হাসান করেন ওপেনিং। তিনে নামতে হয় তাওহিদ হৃদয়কে। এরপরই যেন সব লোয়ার অর্ডার। চারে নামানো হয় শেখ মেহেদীকে, যার ব্যাটিং গড় মাত্র ১১। সোহান দেখান সর্বোচ্চ পর্যায়ের জন্য কতটা নড়বড়ে তিনি।

সিমন্স ব্যাটিং অর্ডারের এমন হ-য-ব-র-ল অবস্থার ব্যাখ্যা দিয়ে লিটনের না থাকার ঘাটতি তুলে ধরেন, 'ঠিক দু'টি ম্যাচ আগে একই ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে বাংলাদেশ ১৬০ (১৭০) রান তাড়া করেছিল। আমরা এমন দল নই যে একইসঙ্গে [তানজিদ তামিম] এবং অধিনায়ককে (লিটন) হারালে সহজে তাদের বদলে কাউকে নিয়ে আসতে পারব। আমরা এখনও সেই পর্যায়ে পৌঁছাইনি, যদিও আমরা সেখানে পৌঁছানোর চেষ্টা করছি।'

'আমাদের অধিনায়ককে হারানো, যিনি এত ভালো ফর্মে ছিলেন, সেটা আমাদের জন্য একটি বড় সমস্যা।'

ছন্দে থাকা লিটন তিন নম্বরে ছিলেন দলের ভরসা। টুর্নামেন্ট শুরু করেন ফিফটি দিয়ে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে রান তাড়ায় শুরুতে ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের আগে অনুশীলনে পিঠের বামপাশে টান পেয়ে সুপার ফোরের শেষ দুই ম্যাচ খেলতে পারেননি। লিটন না থাকা বড় ধাক্কা নিঃসন্দেহে। তাই বলে পুরো দল এলোমেলো হয়ে যাওয়া বিস্ময়কর।

সিমন্সের আরেক ব্যাখ্যা চোখ কপালে তোলার মতন। শেখ মেহেদীকে চারে পাঠানো হয়েছিল নাকি পেস বল হিট করার জন্য। অথচ ঘরোয়া ক্রিকেটে যার পেস বলের দুর্বলতা বেশ প্রকট। এই অফ স্পিনারকে চার নম্বরে পাঠানো সম্পর্কে সিমন্স বলেন, 'আপনি হয়তো চার নম্বর দেখাচ্ছেন। আমি এটিকে সেই হিসেবে দেখছি যে এমন একজনকে পাঠানো যে সেই মুহূর্তে পেসারদের মোকাবিলা করতে পারত। আমরা তখনও পাওয়ার প্লেতে ছিলাম।'

Comments

The Daily Star  | English
Tarique Rahman speech at Dhaka reception

'This country belongs to people of the hills and plains, Muslims, Hindus, Buddhists and Christians'

Tarique invokes Martin Luther King at Dhaka reception: 'I have a plan for Bangladesh.'

2h ago