ডাকসুর সুপার-থ্রিতে নারীদের অন্তর্ভুক্তিই আমার প্রধান লক্ষ্য: সাবিনা ইয়াসমিন

সাবিনা ইয়াসমিন। ছবি: সংগৃহীত

গণতান্ত্রিক পরিবেশে নারীদের অন্তর্ভুক্তি বাড়ানোর লক্ষ্যে আসন্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন 'ডাকসু ফর চেঞ্জ' প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী সাবিনা ইয়াসমিন।

দ্য ডেইলি স্টারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে  ছাত্র অধিকার পরিষদের এই নারীনেত্রী বলেন, 'জুলাই আন্দোলনে নারীদের এত বড় অংশগ্রহণ থাকা সত্ত্বেও দেখা গেছে যে তাদের সাইড করে দেওয়ার টেন্ডেন্সি তৈরি হয়েছে। আমার মনে হয়েছে জুলাই আন্দোলনের মাধ্যমে যে গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি হয়েছে সেখানে নারীদের অন্তর্ভুক্তি হওয়া খুবই জরুরি।'

'নারীরাই নারীদের সমস্যাগুলো সহজে চিহ্নিত করতে পারে এবং সমাধান করতে পারি। অনেক ক্ষেত্রে পুরুষরা সেই সমাধানগুলো দিতে পারে না। এজন্য আমার মনে হয়েছে ডাকসুর সুপার-থ্রিতে নারীদের থাকা উচিত,' বলেন তিনি।

শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, 'জুলাই আন্দোলনের আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রাখার পর থেকেই সাত কলেজ পৃথকীকরণ আন্দোলন, পিএসসি সংস্কার আন্দোলনসহ বিভিন্ন দাবিদাওয়া ও প্রতিবাদে আমি সক্রিয় ছিলাম। ডাকসু নির্বাচনের জন্যও দীর্ঘ আন্দোলন করেছি, অনশন কর্মসূচি পর্যন্ত করেছি।'

নির্বাচিত হলে প্রথম অগ্রাধিকার হিসেবে তিনি নিরাপদ ও নারী-বান্ধব ক্যাম্পাস গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তার ভাষ্য, 'নারীরা প্রায়ই ক্যাম্পাসে হয়রানির শিকার হন। বহিরাগতদের অবাধ প্রবেশের কারণে নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয়। ক্যাম্পাসের পাশেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কয়েকদিন পরপর সমাবেশ হয়,এ তখন বহিরাগতরা ক্যাম্পাসে ঢুকে নারীদের হেনস্তা করে। এগুলো প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। আমি চাই প্রক্টোরিয়াল টিম আরও সক্রিয় হোক এবং প্রয়োজনে তাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করা হোক।'

আবাসন সংকট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সাবিনা বলেন, 'বর্তমানে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত হল না থাকায় এক রুমে ৬-৮ জনকে থাকতে হয়। খাবারের মান খুবই খারাপ। আমি চাই শিক্ষার্থীদের থাকার জায়গাটা যেন স্বাস্থ্যকর হয়। এটা নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করব। এজন্য আমরা "ওয়ান স্টুডেন্ট, ওয়ান বেড, ওয়ান টেবিল" নীতি বাস্তবায়ন করতে পারি।'

শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিয়েও তিনি কাজ করবেন বলে জানান। বলেন, 'এত বড় ক্যাম্পাসে কোনো বড় ফার্মেসি নেই। আমি চাই বিভিন্ন জায়গায় মেডিসিন কর্নার এবং নারী শিক্ষার্থীদের জন্য স্যানিটারি ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন করা হোক।'

শিক্ষা ও গবেষণার পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন তুলে এই জিএস প্রার্থী বলেন, 'গবেষণার বাজেট এখানে খুবই সীমিত। লাইব্রেরিতে বসার যথেষ্ট জায়গা নেই। এ কারণে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা অনেক ক্ষেত্রেই ব্যাহত হয়। আমরা চাই প্রশাসন শিক্ষাসহ আমাদের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করুক। প্রয়োজনে আমরা প্রশাসনের সহযোগী শক্তি হয়ে কাজ করব।'

সার্বিক নির্বাচনী পরিবেশ প্রসঙ্গে সাবিনা অভিযোগ করেন, আচরণবিধি লঙ্ঘন করে কিছু সংগঠন পোস্টার লাগালেও প্রশাসন যথাসময়ে ব্যবস্থা নেয়নি। তিনি প্রশাসনের কাছে সব দলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।

Comments

The Daily Star  | English
Yunus, Charter, and Our Future

Yunus, Charter, and Our Future

Can the vision for 'New Bangladesh' ignore the poor, farmers, workers, youth, women, or employment and climate crises?

9h ago