ক্যাম্পাসে যাতে গেস্টরুম, গণরুম সংস্কৃতি না ফেরে নিশ্চিত করব: শেখ সাদী

শেখ সাদী হাসান। ছবি: স্টার

জয়ী হলে ক্যাম্পাসে যাতে গেস্টরুম-গণরুম সংস্কৃতি না ফেরে, তা নিশ্চিত করবেন বলে জানিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের সহসভাপতি প্রার্থী (ভিপি) শেখ সাদী হাসান।

দ্য ডেইলি স্টারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জাবির মীর মশাররফ হোসেন হল ছাত্রদলের এই সভাপতি বলেন, ছাত্রদল মনোনীত প্যানেল থেকে আমি নির্বাচন করছি। সংগঠন উপযুক্ত মনে করেছে বলেই আমাকে এই পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য নির্বাচিত করেছে। ছাত্রদলের একটা অতীত ঐতিহ্য আছে। সবচেয়ে বড় ও একক সংগঠন হিসেবে স্কুল-কলেজসহ প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রদল তাদের অতীত ঐতিহ্য ধরে রেখে শিক্ষার্থীবান্ধব কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ছাত্রদল নেতা হিসেবে আমরাও ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীবান্ধব নানা কার্যক্রম করছি। সেগুলোর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হয়েছেন, হচ্ছেন। সেজন্যই মনে করি শিক্ষার্থীরা আমাকে ভোট দিয়ে তাদের হয়ে কাজ করার জন্য বেছে নেবেন।

জয়ী হলে কী কী করবেন, জানতে চাইলে সাদী বলেন, গত ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদী আমলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গেস্টরুম ও গণরুমের অপসংস্কৃতি ছিল। ক্যাম্পাসে যাতে এই অপসংস্কৃতি আর না ফেরে, জয়ী হলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তা নিশ্চিত করব। এগুলো কখনোই আর ক্যাম্পাসে ফিরতে দেবো না। কেবল কথায় নয়, কাজে তা প্রমাণ করব। এ ছাড়া আমাদের ক্যাম্পাসে খাদ্য, চিকিৎসা ও পরিবহনসহ মৌলিক যে সংকটগুলো আছে, সেগুলো সমাধানে কাজ করব। আমাদের মেডিকেল সেন্টারের অবস্থা নাজুক, যেটাকে আমরা নাপা সেন্টার বলি। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এটাকে পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল সেন্টার হিসেবে রূপ দিতে কাজ করব। প্রশাসনিক কাজে শিক্ষার্থীদের এক ভবন থেকে আরেক ভবনে যেতে হয়। এই ধরনের ভোগান্তি কমাতে অটোমেশনের আওতায় নিয়ে আসব, যাতে শিক্ষার্থীরা এক জায়গায় সহজেই সব সেবা পান।

'আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা অল্প টাকার জন্য টিউশনি করেন। এতে তারা ক্যাম্পাস লাইফ যেমন উপভোগ করতে পারেন না, তেমনি এর প্রভাব তাদের পড়াশোনাতেও পড়ে। শিক্ষার্থীদের জন্য যাতে বৃত্তির ব্যবস্থা করা হয়, সেটা নিয়ে কাজ করব। এতে তাদের অর্থ সংকট কিছুটা হলেও লাঘব হবে। সব মিলিয়ে আমরা এই ক্যাম্পাসটাকে আরও শিক্ষার্থীবান্ধব করে গড়ে তুলব।'

জাকসু নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, দীর্ঘ ৩৩ বছর পর জাকসু নির্বাচন হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের জন্য জাকসু অত্যাবশ্যকীয়। জাকসু যাতে নিয়মিত হয়—আমি জয়ী হলে তা নিশ্চিত করব। জয়ী না হলেও এই লক্ষ্যে কাজ করে যাব।

নির্বাচনের পরিবেশ পরিবর্তন নিয়ে এই ছাত্রদল নেতা বলেন, নির্বাচনের আগে কিছু ডিপার্টমেন্টে পরীক্ষা আছে। সেই কারণে জাকসুর আমেজটা যথাযথভাবে পাওয়া যাচ্ছে না। প্রশাসনকে বিষয়টি বিবেচনা করতে বলেছি। দ্বিতীয়ত ভোটের আগে ক্যাম্পাস বন্ধের সিদ্ধান্তটি ঠিক হয়নি। কারণ এতে অনেকেই বাসায় কিংবা ট্যুরে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। প্রশাসন সেই সিদ্ধান্ত বিবেচনা করে শিক্ষার্থীদের ভোটমুখী করতে কাজ করবে বলে আশা করছি। ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ যথাযথভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। একইসঙ্গে ক্যাম্পাসে যথাযথ নিরাপত্তাও নিশ্চিত করতে হবে।

সবশেষে সাদী বলেন, আমরা সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে জুলাই আন্দোলনের মাধ্যমে দেশকে ফ্যাসিবাদমুক্ত করেছি। সেই পরিচিত মুখগুলোই আমরা নির্বাচনে দাঁড়িয়েছি। এটুকু তো নিশ্চিত যে সবাই বাংলাদেশপন্থি। সুতরাং এখানে সংঘর্ষ হওয়ার কোনো ধরনের সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করছি। ছাত্রদলের প্যানেল থেকে আমি নির্বাচন করছি। কিন্তু নির্বাচিত হলে তো ছাত্রদলের নয়, পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিপি হবো। সেই হিসেবে দল-মতের ঊর্ধ্বে গিয়েই আমি কাজ করব। নির্বাচিত হলে শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করব।'

Comments

The Daily Star  | English

Making sense of the numbers

What Ducsu vote counts reveal about Shibir’s dominance

2h ago