জাকসু ভিপি আব্দুর রশিদ জিতু, জিএস মাজহারুল ইসলাম
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী প্যানলের আব্দুর রশিদ জিতু এবং সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে জয়ী হয়েছেন ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের মো. মাজহারুল ইসলাম।
এজিএস (পুরুষ) পদে জয়ী হয়েছেন ফেরদৌস আল হাসান ও এজিএস (নারী) পদে জয়ী হয়েছেন আয়েশা সিদ্দিকা মেঘলা।
এ ছাড়াও, পরিবহন ও যোগাযোগ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন তানভীর রহমান, খাদ্যনিরাপত্তা সম্পাদক হুসনি মোবারক, সহ সমাজসেবা সম্পাদক তৌহিদ হাসান, সমাজসেবা সম্পাদক আহসান লাবিব, তথ্য প্রযুক্তি ও গ্রন্থাগার সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম, সহ ক্রীড়া সম্পাদক (পুরুষ) মাহাদী হাসান, সহ সমাজসেবা সম্পাদক (নারী) নিগার সুলতানা, সহ ক্রীড়া সম্পাদক (নারী) ফারহানা আকতার, সহ সাংস্কৃতিক সম্পাদক রায়হান উদ্দীন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক মহিবুল্লাহ শেখ এবং সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম।
কার্যকরী সদস্য (পুরুষ) পদে নির্বাচিত হয়েছেন মোহাম্মদ আলী চিশতী, আবু তালহা, তরিকুল ইসলাম এবং কার্যকরী সদস্য (নারী) পদে নির্বাচিত হয়েছেন নুসরাত জাহান, নাবিলা বিনতে হারুন ও ফাবলিহা জাহান।
ভোটগ্রহণের দুইদিন পর আজ শনিবার রাতে নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে ঘোষিত চূড়ান্ত ফলাফল থেকে এ তথ্য জানা যায়। এর আগে, বিকেল সোয়া ৫টার দিকে চূড়ান্ত ফল ঘোষণা শুরু হয়।
ফল ঘোষণা শুরুর আগ মুহূর্তে নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকালে মৃত্যুবরণকারী চারুকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জান্নাতুল ফেরদৌস মৌমিতার স্মরণে এক মিনিটের নীরবতা পালন করা হয়।
নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, এই নির্বাচনে কোনো অনিয়ম হয়নি। তবে, কিছু বিচ্যুতি হতে পারে এবং তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা হয়।
এর আগে, অনিয়ম-অভিযোগ-বর্জনের মধ্য দিয়ে জাকসু নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়। অধিকাংশ প্যানেল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী জাকসু নির্বাচনে নানা অব্যবস্থাপনা ও ভোট কারচুপির অভিযোগ তোলেন।
ব্যালট পেপার নিয়েও অভিযোগ ওঠে। ছাত্রদলের অভিযোগ, জামায়াতের প্রতিষ্ঠান থেকে ব্যালট ছাপানো হয়েছে। পাল্টা অভিযোগ তুলে শিবির সমর্থিত ভিপি প্রার্থীর দাবি করেন, জামায়াত নয়, বরং বিএনপি সমর্থকের প্রতিষ্ঠানে ব্যালট ছাপানো হয়েছে।
'পুরো প্রক্রিয়াই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং পূর্বপরিকল্পিতভাবে কারচুপির জন্য সাজানো হয়েছে'—অভিযোগ তুলে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত তিন শিক্ষক দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান। নির্বাচনী দায়িত্ব পালনকালে চারুকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জান্নাতুল ফেরদৌস মৌমিতার মৃত্যু নিয়েও তাদের একজন।
শুক্রবার রাতে এক সংবাদ সম্মেলন করে পদত্যাগের ঘোষণা দেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার।
তিনি জানান, নির্বাচন চলাকালে আসা অভিযোগগুলোর সুরাহা না করেই ভোট গণনা চালিয়ে যাওয়ায় তিনি নির্বাচন কমিশনের সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করছেন।
ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার ২৪ ঘণ্টা পরও ফলাফল না পাওয়ায় ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেন শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও প্রার্থীরা।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ হলে অনুষ্ঠিত হয় জাকসু নির্বাচনের ভোটগ্রহণ।
প্রথমে ওএমআর মেশিনে ভোট গণনা হবে বলে জানানো হলেও, মেশিন সরবরাহ নিয়ে ছাত্রদল ও শিবিরের পারস্পরিক দোষারোপের পর হাতে ব্যালট গোনার সিদ্ধান্ত হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিভিন্ন হল থেকে ব্যালট বাক্স সিনেট ভবনে নেওয়া হয় এবং সব প্রস্তুতি শেষে রাত ১০টার পর শুরু হয় গণনা।
নির্বাচনে মোট ১১ হাজার ৭৪৩ জন নিবন্ধিত ভোটার ছিলেন। তাদের মধ্যে প্রায় ৬৭-৬৮ শতাংশ ভোট দিয়েছেন বলে জানায় নির্বাচন কর্তৃপক্ষ।
জাকসুতে ২৫টি এবং হল সংসদে ১৫টি পদ রয়েছে।
এর আগে সর্বশেষ জাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৯২ সালে।


Comments