জামায়াত নয়, বিএনপি সমর্থকের প্রতিষ্ঠানে ছাপা হয়েছে জাকসু ব্যালট, দাবি শিবির সমর্থিত ভিপি প্রার্থীর

জাকসু ব্যালট বিতর্ক
ছবি: সাজ্জাদ হোসেন/স্টার

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে ব্যালট পেপার ও ওএমআর শিট জামায়াতঘনিষ্ঠ প্রতিষ্ঠান নয়, বরং বিএনপির একজন সমর্থকের প্রতিষ্ঠান থেকে এসেছে বলে দাবি করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল থেকে সহ-সভাপতি (ভিপি) প্রার্থী আরিফুল্লাহ।

তিনি বলেন, 'যে এই অভিযোগে অভিযুক্ত, সেই এইচআরসফট বিডি কোম্পানির প্রধান রনি একজন বিএনপি সমর্থক। তার ফেসবুক প্রোফাইলে খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও অন্যান্য বিএনপি নেতার ছবি আছে। অথচ আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ ছড়ানো হচ্ছে।'

এর আগে জাকসু নির্বাচনে ছাত্রদল সমর্থিত ভিপি প্রার্থী শেখ সাদী হাসান ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) সমর্থিত শিক্ষার্থী ঐক্য ফ্রন্ট প্যানেলের জিএস প্রার্থী আবু তৌহিদ মোহাম্মদ সিয়াম অভিযোগ করেন, নির্বাচনে ভোটের জন্য ব্যবহৃত ব্যালট পেপার যে কোম্পানি সরবরাহ করেছে তার সঙ্গে জামায়াতে ইসলামী জড়িত।

এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ভিপি প্রার্থী আরিফুল্লাহ এ মন্তব্য করেন।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে পুরাতন রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে আরিফুল্লাহ অভিযোগ করেন, 'গতকাল থেকে আমরা লক্ষ্য করছি যে বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে।'

তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্যানেল উভয়কেই বাধা সৃষ্টির জন্য দায়ী করেন।

আরিফুল্লাহ বলেন, '৩৩ বছর পর জাকসু নির্বাচন হচ্ছে। সকাল ৯টা থেকে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট শুরু হলেও আমরা বেশকিছু অনিয়ম লক্ষ্য করেছি। নির্বাচন কমিশনের উচিত ছিল সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য পূর্ণ প্রস্তুতি নেওয়া, কিন্তু তারা যথাযথ প্রস্তুতি নেয়নি।'

তিনি দাবি করেন, তারা পোলিং এজেন্ট নিয়েও সমস্যার মুখে পড়েন। বলেন, 'গতরাতে আমরা আমাদের এজেন্ট বসানোর অনুমতি চেয়েছিলাম, কিন্তু প্রশাসন অনেক দেরিতে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়। আজ সকালে যখন আমরা পোলিং এজেন্ট পাঠাই, হল কর্তৃপক্ষ তাদের ঢুকতে দেরি করায়।'

আরিফুল্লাহ অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আজ সকাল ৬টা থেকে কোনো সাবেক শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে না দেওয়ার ঘোষণা দিলেও অনেক সাবেক ছাত্রদল কর্মী বিভিন্ন পয়েন্ট ও আবাসিক হলে উপস্থিত ছিলেন।

তিনি বলেন, 'তারা ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছে, কিন্তু একের পর এক অভিযোগের পরও কমিশন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।'

তিনি উল্লেখ করেন, সাংবাদিকদের শুরুতে নারীদের আবাসিক হলে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি, যদিও তাদের সব জায়গায় প্রবেশের অনুমতি থাকা উচিত ছিল।

ব্যালট পেপার নিয়ে তিনি অভিযোগ তোলেন, 'আমরা জানতাম ১০ শতাংশ অতিরিক্ত ব্যালট ছাপানো হয়েছে। আমরা চেয়েছিলাম এগুলো সিল করে রাখা হোক এবং প্রতিটি হলে ভোটারের সংখ্যা অনুযায়ী ব্যালট সরবরাহ করা হোক। কিন্তু আজ আমরা শহীদ সালাম বরকত হল, মীর মোশাররফ হোসেন হলসহ আরও অনেক হলে অতিরিক্ত ব্যালট পেয়েছি। এটি স্পষ্টভাবে কমিশনের অপ্রস্তুতির প্রমাণ।'

বিভিন্ন হলে ছাত্রদল ভয়ভীতি প্রদর্শন করেছে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, 'তারা দলবদ্ধভাবে ঘুরছে এবং আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। জাহানারা ইমাম হলে তারা এক প্রহরীকেও মারধর করেছে। এক হলে তারা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে ভোট নস্যাৎ করার জন্য। আমরা প্রশাসনকে জানিয়েছি এবং কমিশনের কাছ থেকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশা করি।'

আরিফুল্লাহ জানান, ছাত্রদল-সংশ্লিষ্ট বহিরাগতরা ক্যাম্পাসের চারপাশে জড়ো হয়েছে বলে তাদের কাছে তথ্য আছে।

তিনি সতর্ক করে বলেন, 'এটা উদ্বেগজনক। যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে।'

Comments

The Daily Star  | English

Shibli Rubayat, Reaz Islam banned for life in market over scam

In 2022, asset management firm LR Global invested Tk 23.6 crore to acquire a 51 percent stake in Padma Printers, a delisted company, from six mutual funds it manages

1h ago