উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্যেও কমেছে খাদ্যশস্য বিতরণ

প্রতীকী ছবি। সংগৃহীত

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে টানা মূল্যস্ফীতির চাপ দরিদ্র মানুষের জীবন আরও কঠিন করে তুললেও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও অকার্যকর স্থানীয় প্রশাসনের কারণে চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতায় সরকারি খাদ্য বিতরণ আগের বছরের তুলনায় ৭ শতাংশের বেশি কমেছে।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ১১ এপ্রিল পর্যন্ত খাদ্য অধিদপ্তর এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থা খাদ্য বিতরণ কর্মসূচির মাধ্যমে প্রায় ২৩ দশমিক ৪৬ লাখ টন চাল ও গম বিতরণ করেছে।

এটি আগের অর্থবছরের ১ জুলাই থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে সরকারি সংস্থাগুলোর বিতরণ করা ২৫ দশমিক ৩৪ লাখ টনের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।

সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) এর নির্বাহী পরিচালক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সেলিম রায়হান বলেন, এটি কমার একটি সম্ভাব্য কারণ হতে পারে গত বছরের রাজনৈতিক পরিবর্তন, যা বিতরণ চ্যানেলগুলোকে প্রভাবিত করেছে।

এই হ্রাসকে 'উদ্বেগজনক' হিসেবে চিহ্নিত করেন এ অধ্যাপক। তিনি মনে করেন, মৌলিক সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার জন্য বিকল্প কোনো ব্যবস্থা থাকা উচিত ছিল।

সেলিম রায়হান আরও বলেন, পর্যাপ্ত সরবরাহের কারণে শীতকালে সবজির দাম কমে গেলেও, গ্রীষ্মকালীন নতুন পণ্যের দাম বেশি থাকে। তাই, নিম্ন আয়ের মানুষেরা এখনও কষ্টের মধ্যে আছেন।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে, ২০২৩ সালের মার্চ থেকে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশেরও ওপরে রয়েছে। গত তিন মাস ধরে প্রতি মাসে কিছুটা কমলেও, মার্চ মাসে বাংলাদেশে মোট মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এই সময়ে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি আরও বেড়ে ৯ দশমিক ৭০ শতাংশ হয়েছে।

মার্চ মাসে ১২ মাসের গড় মুদ্রাস্ফীতি ১০ দশমিক ২৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

এই প্রেক্ষাপটে খাদ্য বিতরণ কমে যাওয়াকে অপ্রত্যাশিত বলে মন্তব্য করেছেন সেলিম রায়হান। তিনি বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার এই অর্থবছরে খাদ্য বিতরণ পরিকল্পনা কমিয়ে দেয়। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৩৩ দশমিক ৫৬ লাখ টন থেকে তা ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কমিয়ে ৩০ দশমিক ৩ লাখ টন করা হয়।

সেলিম রায়হান বলেন, টানা মূল্যস্ফীতির এই সময়ে সরকারের উচিত ছিল খাদ্য বিতরণ কর্মসূচি আরও বাড়ানো।

তিনি আরও বলেন, খাদ্য বিতরণে বরাদ্দ বাড়ানো আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ কর্মসূচির শর্তের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়। কারণ, আইএমএফ-এর শর্ত মূলত জ্বালানি খাতে ভর্তুকি কমানোর সঙ্গে সম্পর্কিত, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির সঙ্গে নয়।

তবে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত ওপেন মার্কেট সেলস (ওএমএস) কর্মসূচির আওতায় খাদ্য বিতরণ গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৯ শতাংশ বেড়ে ৯ দশমিক ৪০ লাখ টনে পৌঁছেছে।

(সংক্ষেপিত, বিস্তারিত পড়তে ক্লিক করুন এই লিংকে)

Comments

The Daily Star  | English

BNP sticks to demand for polls by December

In a meeting with Chief Adviser Prof Muhammad Yunus last night, the BNP restated its demands that the next general election be held by December and the government immediately announce a roadmap to that end.

3h ago