হরমুজ প্রণালী বন্ধের শঙ্কা: যুক্তরাষ্ট্রে বাড়তে পারে নিত্যপণ্যের দাম

হরমুজ প্রণালিতে তেলের ট্যাংকার। ফাইল ছবি: রয়টার্স

ইরানের পরমাণু প্রকল্পে হামলার ধাক্কা পড়ছে মার্কিন অর্থনীতিতে। যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববাজারে তেল-গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রে নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

গতকাল রোববার সিএনএন'র প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়ে বলা হয়েছে—এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন: তেলের দাম এভাবে কতদিন বেড়েই চলবে?

গত রাতে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি অন্তত পাঁচ শতাংশ বেড়ে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়।

টেক্সাসের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান লিপো ওয়েল অ্যাসোসিয়েটসের অ্যান্ডি লিপো সংবাদমাধ্যমটিকে জানান, হঠাৎ তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৮০ ডলার হয়ে যায়। গত জানুয়ারির পর তেলের দাম বেড়ে এই পর্যায়ে এসেছে। গত বছরের আগস্ট থেকে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৬০ ডলার থেকে ৭৫ ডলারের মধ্যে ছিল।

তবে এটা এখনো পরিষ্কার নয় যে কতদিন ধরে তেলের দাম বাড়তে থাকবে? গত ১৩ জুন ইসরায়েল আচমকা ইরানে হামলা চালালে তেলের দাম ১০ শতাংশ বেড়ে যায়। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরান হামলায় যোগ দেওয়ার বিষয়ে দুই সপ্তাহ সময় নেওয়ার ঘোষণা দিলে তেলের দাম আবার কমে যায়।

ইরানের পার্লামেন্টে হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেওয়ার প্রস্তাব নেওয়ার পর আসলেই তা বন্ধ করা হবে কি না, সেই পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে তেলের দাম ঠিক কোথায় পৌঁছাবে। এই পথ দিয়েই বিশ্বের মোট অপরিশোধিত তেলের প্রায় ২০ শতাংশ পরিবহন করা হয়।

গত রোববার ভোরে ইরানের পরমাণু কেন্দ্রগুলোয় মার্কিন হামলার পর আক্রান্ত দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি বলেছিলেন যে এই হামলার বদলা নেওয়ার বিষয়ে তাদের হাতে 'অনেক সুযোগ' আছে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির এক ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা ইতোমধ্যে হরমুজ প্রণালী বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।

গতকাল ফক্স নিউজে এসে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও চীনকে আহ্বান জানিয়েছেন, তারা যেন ইরানকে হরমুজ প্রণালী বন্ধ করতে না দেয়। তার মতে, এই প্রণালী বন্ধ করা হলে যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় অন্যান্য দেশের অর্থনীতির বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

কেননা, চীন তার তেল আমদানির চার ভাগের তিন ভাগ আনে পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চল থেকে। সেই হিসাবে যুক্তরাষ্ট্র আমদানি করে তিন শতাংশের কম।

জ্বালানিবিষয়ক প্রতিষ্ঠান গ্যাসবাডি'র পেট্রোলিয়াম বিশ্লেষক প্যাট্রিক ডি হান মনে করেন, তেলের দামের প্রভাব নিত্যপণ্যের ওপর পড়তে সাধারণত দুই-একদিন সময় লাগে।

তবে, অ্যাকাউন্টিং প্রতিষ্ঠান আরএসএম'র প্রধান অর্থনীতিবিদ জো ব্রাসুয়েলাসের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যনীতির সঙ্গে চলমান ইসরায়েল-ইরান সংঘাত যোগ করলে দেখা যায়—'এবারের মূল্যস্ফীতি দ্রুত ও অনেক বেশি হবে। আগামী ৯০ দিনের মধ্যে এর প্রভাব পড়তে পারে।'

অনেক শীর্ষ অর্থনীতিবিদ মনে করছেন—যুক্তরাষ্ট্রে এখন মূল্যস্ফীতি কম হলে বুঝতে হবে তা ঝড়ের আগের শান্তভাব। কেননা, ট্রাম্প শুল্কের কারণে এমনিতেই পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Airport fire exposes costly state negligence

The blaze that gutted the uninsured cargo complex of Dhaka airport on Saturday has laid bare a deep and dangerous negligence in risk management across government installations.

5h ago