চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবলীগের কমিটি নিয়ে অসন্তোষ, দুই সহ-সভাপতির পদত্যাগ

গত বছরের ৩০ মে চট্টগ্রাম নগর ইউনিট যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: সংগৃহীত

সম্মেলনের সাড়ে আট মাসের বেশি সময় পর চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবলীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। 

সোমবার যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মইনুল হোসেন খান নিখিলের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে কমিটি ঘোষণা করা হয়। এস এম রাশেদুল আলমকে সভাপতি ও মো. শাহজাহানকে সাধারণ সম্পাদক করে এ কমিটি করা হয়েছে। 

তবে কমিটি ঘোষণার পরপরই কমিটি নিয়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। নতুন কমিটির দুই সহ-সভাপতি নুরুল মোস্তফা মানিক ও রাজিবুল আহসান সুমন কমিটি ঘোষণার পরপরই পদত্যাগ করেন।

সংগঠনের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানায়, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও মোট ৩২ জন নেতাকে কমিটির বিভিন্ন পদ দেওয়া হয়েছে। আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদনের জন্য কেন্দ্রে জমা দিতে বলা হয়েছে।

এদিকে কমিটি ঘোষণার পর সোমবার রাতে ফেসবুকে এক পোস্টে পদত্যাগের ঘোষণা দেন কমিটির সহ-সভাপতি নুরুল মোস্তফা মানিক। যুবলীগের চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো পদত্যাগপত্রে তিনি বলেছেন, 'গত ৩৫-৩৬ বছর ধরে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে জননেত্রী শেখ হাসিনার ভিশন বাস্তবায়নে ক্ষুদ্র কর্মী হিসেবে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকেছি। চাওয়া-পাওয়ার হিসেবে নিকেশ কিংবা ত্যাগ-তিতিক্ষার ফিরিস্তি তুলে ধরতে চাই না। আমার আবেদন, সদ্যঘোষিত চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী যুবলীগের সহসভাপতি পদ থেকে পদত্যাগ করার সুযোগ দিয়ে বাধিত করবেন।'

যোগাযোগ করা হলে মানিক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, তিনি আগের কমিটিতে একই ইউনিটের সহ-সভাপতি ছিলেন এবং তাই তিনি এই পদে আর থাকতে আগ্রহী নন। এ কারণে তিনি কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন।

তিনি বলেন, 'আমি সভাপতি পদের জন্য সিভি জমা দিয়েছিলাম, সহ-সভাপতি পদের জন্য নয়।'

কমিটির আরেক সহ-সভাপতি রাজিবুল আহসান সুমনও তার ফেসবুকে পদত্যাগপত্র পোস্ট করেছেন। চিঠিতে যুবলীগের চেয়ারম্যানকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেছেন, তিনি সহ-সভাপতি পদের জন্য সিভি জমা দেননি, তাই এই পদে থাকতে আগ্রহী নন।

তিনি বলেছেন, 'আশা করেছিলাম, রাজনীতিতে আমার মেধা, যোগ্যতা ও ত্যাগের মূল্যায়ন করে আমাকে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবলীগের সভাপতি নির্বাচিত করবেন। কিন্তু দীর্ঘ ১০ মাস পর চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবলীগের আংশিক কমিটিতে আমার নাম সহ-সভাপতি হিসেবে দেখে বিস্মিত ও হতাশ হয়েছি।'

যোগাযোগ করা হলে সুমন ডেইলি স্টারকে জানান, তিনি সোমবার রাতে হোয়াটসঅ্যাপে চেয়ারম্যানকে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন এবং মঙ্গলবার তার ঠিকানায় চিঠিও পাঠিয়েছেন।

যোগাযোগ করা হলে কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি কোনো নেতার কাছ থেকে পদত্যাগপত্র পাইনি।'

দুই নেতার ফেসবুক পোস্টের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি পোস্টগুলো দেখেননি বলে জানান।

তিনি বলেন, 'অনেক যোগ্য নেতা কমিটির সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ পদের জন্য মাত্র দুজনকে বেছে নেওয়া ছাড়া কোনো উপায় ছিল না।'

'এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ পদের জন্য যোগ্যদের মধ্যে সবচেয়ে যোগ্য দুইজনকে চেয়ারম্যান এবং সাধারণ সম্পাদক বিভিন্ন যাচাই বাছাইয়ের মাধ্যমে নেতা নির্বাচিত করেছেন,' যোগ করেন তিনি।

এ বিষয়ে যুবলীগ চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২৮ মে পটিয়া উপজেলার পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা শাখার এবং পরদিন হাটহাজারী উপজেলার হাটহাজারী পার্বতী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা শাখার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। 

৩০ মে বন্দরনগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে নগর ইউনিট যুবলীগের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়।

সম্মেলনের প্রায় সাড়ে ৫ মাসের বেশি সময় পর ১৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবলীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Unveil roadmap or it’ll be hard to cooperate

The BNP yesterday expressed disappointment over the absence of a clear roadmap for the upcoming national election, despite the demand for one made during its recent meeting with Chief Adviser Prof Muhammad Yunus.

7h ago