জোটবদ্ধ নির্বাচনে এবার দ্বিগুণ আসন চায় ১৪ দলের শরিকরা

জোটবদ্ধ নির্বাচনে এবার দ্বিগুণ আসন চায় ১৪ দলের শরিকরা
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেছেন, ১৪ দলীয় জোট আছে এবং জোট একসঙ্গে নির্বাচন করবে।

তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন, আসন ভাগাভাগির বিষয়টি সম্মানজনকভাবে নিষ্পত্তি হবে।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ১৪ দলীয় জোটের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমুর ইস্কাটনের বাসভবনে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।

ওই বৈঠকে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন উপস্থিত ছিলেন।

ইনু বলেন, 'জননেত্রী শেখ হাসিনার ১৪ দলের সঙ্গে বৈঠক এবং রাতের খাওয়া খাওয়ার মধ্য দিয়ে এই বার্তা দেশবাসীকে পরিষ্কারভাবে বলেছেন যে, জোট আছে, জোট একসঙ্গে নির্বাচন করবে। সেদিক থেকে আসন ভাগাভাগির বিষয়টা সম্মানজনকভাবে আমরা নিষ্পত্তি করতে সক্ষম হবো এবং জোটের ভিত্তিতেই নির্বাচন করতে আমরা মাঠে নামব।'

আপনারা যতগুলো আসন আশা করছেন, সে ব্যাপারে কতটা আশাবাদী—জানতে চাইলে গণমাধ্যমকর্মীদের ইনু বলেন, 'যে কোনো লেনদেনে দর কষাকষি হবে, মন কষাকষি হবে কিন্তু যদি বন্ধুদের মধ্যে দর কষাকষি-মন কষাকষি হয়, সে বিচারে হাসিমুখে উঠে যাব।'

আসন বিন্যাস প্রসঙ্গে ইনু আরও বলেন, 'সব সময় আমরা যার যার দলের প্রার্থী দেই। তারপর আমরা সমন্বয় সাধন করি। সুতরাং যেখানে জোটের প্রার্থী আসবে, সেখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী প্রত্যাহার করে নেবে।

'এই মুহূর্তে আমাদের ১৪ দলের ১০ জন সংসদ সদস্য আছেন। আমরা আশা করছি ২০ জন করতে। সেটা আমরা চেষ্টা করব। বাকি শেখ হাসিনা, তার দল সব কিছু মিলিয়ে উনি বিবেচনা করবেন,' বলেন তিনি।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'স্বতন্ত্র প্রার্থী সম্পর্কে কী কৌশল গ্রহণ করা হবে সেটা শেখ হাসিনাকে আমরা বিবেচনা করতে বলেছি। এই ব্যাপারে আরও সময় আছে, আলোচনা করে দেখব আমরা।'

জোটের প্রার্থী সবাই নৌকা মার্কায় নির্বাচন করবে বলেও এ সময় জানান জাসদ সভাপতি।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সঙ্গে আপনাদের লড়তে হবে। কারণ তাদের বসিয়ে দিলে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করা হবে। সে ক্ষেত্রে আপনারা কতটুকু প্রস্তুত—জানতে চাইলে ইনু বলেন, 'কেউ প্রত্যাহার করে নিলে নির্বাচনের আচরণবিধি ভঙ্গ হয় না। সুতরাং ওটা কোনো সমস্যা না। প্রত্যাহার করার জন্য যার যার দল সেই প্রার্থীকে অনুরোধ করতে পারে, নির্দেশ দিতে পারে। সুতরাং এ ব্যাপারে আমি মনে করি না মনোমালিন্য কিছু হবে।

'এটা কৌশলগত সিদ্ধান্ত। সেই সিদ্ধান্ত কীভাবে কার্যকরী করবে; শেষ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে এবং তারপর আমরা বুঝবো, প্রত্যেক আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী কীভাবে ভূমিকা রাখছে,' যোগ করেন তিনি।

শরিকদের পক্ষ থেকে এই ব্যাপারে কোনো দাবি জানানো হয়েছে কি না প্রশ্ন করা হলে ইনু বলেন, 'আমরা মনে করেছি যে, আওয়ামী লীগের নামকরা নেতারা...জোটের প্রার্থীর এখানে স্বতন্ত্র হিসেবে লড়াই করলে সেটা আওয়ামী লীগ বনাম সেই দলের হয়ে যায়। এটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে। আমরা বিবেচনা করার কথা বলেছি।'

সর্বনিম্ন কয়টি আসন হলে আপনারা জোটে যাবেন—জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'এটা আদর্শিক জোট। সুতরাং এই জোটে সর্বনিম্ন-সর্বোচ্চ; এই মাত্রার ভিত্তিতে জোটটাকে আমরা মাপছি না।'

নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি প্রসঙ্গে ইনু বলেন, 'যেহেতু এখন পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত চক্রের আন্দোলনের নামে নাশকতা আছে, তা বাংলাদেশের গ্রামে কোনো ছাপ ফেলেনি। সুতরাং পরিবেশ শান্তিপূর্ণ এবং নির্ভয় অবস্থা বিরাজ করছে। এই অবস্থায় বিএনপি থাকুক অথবা না থাকুক, যে ভোটই হোক না কেন, সেই ভোটে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ থাকলে জনগণের উপস্থিতি, ভোটার উপস্থিতি অনেকাংশে বেশি হবে।'

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, এটি আদর্শিক জোট। এই জোট টিকে থাকবে এবং জোটের মাধ্যমে নির্বাচন হবে। তবে উইনেবল ক্যান্ডিডেটকে বাদ দিয়ে জোটকে ছাড় দেবে এই নীতিতে আওয়ামী লীগ নেই। আপনারা তার এই নীতিকে কীভাবে দেখছেন জানতে চাইলে জাসদ সভাপতি গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, 'এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য নেই। নির্বাচনে কে উইনেবল আর কে উইনেবল না এটা কোনো নেতা-নেত্রী আগে থেকে বলে দিতে পারে না। তাই যদি হতো তাহলে ক্ষমতায় যারা বারবার গেছে তাদের প্রার্থীরা পরাজিত হতেন না।'

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh Bank plans mergers of troubled banks, NBFIs

Six Islamic banks are likely to be merged initially, said central bank officials.

11h ago