চাকসু নির্বাচনে ছাত্রদল-শিবিরের পাল্টাপাল্টি আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তুলেছে ছাত্রদল ও ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল।
আজ বুধবার দুপুর ২টায় ছাত্রদল ও বিকেল ৫টায় ছাত্রশিবির পৃথক লিখিত অভিযোগ জমা দেয় চাকসু নির্বাচন কমিশনের কাছে।
অভিযোগে শিবির সমর্থিত 'সম্প্রীতি শিক্ষার্থী জোট' প্রার্থীরা বলেন, বুধবার দুপুর ১২টা ৩০ মিনিট থেকে ১টার মধ্যে আইন অনুষদের এলএলএম ক্লাস চলাকালে আইন বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল কর্মী নাঈম উদ্দিন শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করে লিফলেট বিতরণসহ নির্বাচনী প্রচারণা চালান। এ সময় তিনি প্রতিদ্বন্দ্বী প্যানেলের বিরুদ্ধে উত্তেজনাকর বক্তব্য দেন, যা ক্লাসে বিঘ্ন ঘটায় এবং অস্বস্তিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে।
তাদের দাবি, ঘটনার ভিডিওচিত্র ও সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষিত রয়েছে এবং ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশনের সচিব বরাবর পাঠানো হয়েছে।
তাদের ভাষায়, 'একটি পক্ষ শুধু প্রচারণাই চালায়নি, বরং প্রতিদ্বন্দ্বী সংগঠনকে নিয়ে অশোভন মন্তব্য করেছে, যা আচরণবিধির স্পষ্ট লঙ্ঘন।'
ছাত্রদলের অভিযোগে বলা হয়, বুধবার দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হৃদয় চন্দ্র তরুয়া ভবনের (নতুন কলা ভবন) প্রথম তলার ৩৩২৩ নম্বর কক্ষে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত 'সম্প্রীতি শিক্ষার্থী জোট'-এর সহসভাপতি (ভিপি) পদপ্রার্থী মো. ইব্রাহীম হোসেন প্রায় ২০ মিনিট ধরে ক্লাসে অবস্থান করে প্রচারণা চালান।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, তিনি ক্লাসের সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার করে প্রচারণা চালান, যা আচরণবিধির সরাসরি লঙ্ঘন।
নির্বাচনী আচরণবিধিমালা ২০২৫-এর ৪(ঙ) ধারায় বলা হয়েছে কোনো প্রার্থী বা সমর্থক ক্লাস, পরীক্ষা কিংবা তার আশপাশে প্রচারণা বা সভা-সমাবেশ করতে পারবেন না। শিক্ষা কার্যক্রমে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয় এমন কর্মকাণ্ড, যেমন মাইক বা সাউন্ড সিস্টেমের ব্যবহারও নিষিদ্ধ।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, 'শিবিরের ভিপি প্রার্থী আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন। আমরা এর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। তবে লক্ষ্য করছি, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও উপস্থিত কিছু শিক্ষক বিষয়টিকে ভিন্নভাবে দেখছেন। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচনে কোনো বিশেষ গোষ্ঠীর স্বার্থ প্রাধান্য না পাক। আশা করি কমিশন দ্রুত ব্যবস্থা নেবে।'
চবি ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'তারা (ছাত্রদল) শুধু আচরণবিধি লঙ্ঘনই করেনি, আমাদের সংগঠন নিয়ে অশালীন মন্তব্যও করেছে। আমাদের কাছে ভিডিওসহ সব প্রমাণ রয়েছে। আমরা জানি, প্রার্থী না হলেও যদি কেউ প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালায়, সেটিও আচরণবিধি লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য হয়।'
এ বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন বলেন, 'আমরা উভয়পক্ষের অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগপত্রগুলো নির্বাচনী আচরণবিধি সংক্রান্ত কমিটির কাছে পাঠানো হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।'
Comments