শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে কখনো আপস করিনি, করবও না: শাফায়েত হোসেন

'শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে কখনো আপস করেননি এবং করবেনও না' বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী মো. শাফায়েত হোসেন।
দ্য ডেইলি স্টারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে চবি ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ফিজিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড স্পোর্টস সাইন্স বিভাগের এই শিক্ষার্থী বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু থেকেই আমি বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে আছি। সেই কারণে সাংগঠনিক একটা দক্ষতা আমার মধ্যে আছে। অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, আপস বা আলোচনার মাধ্যমে সব আদায় করা যায় না, প্রয়োজনে চাপ প্রয়োগ করতে হয়। সেই জায়গা থেকে মনে করছি, শিক্ষার্থীদের অধিকার আমি আদায় করে আনতে পারব। সেই ভাবনা থেকেই নির্বাচনে দাঁড়িয়েছি।'
'ছাত্রদল করার কারণে বিগত সময়ে আমাকে নানা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয়েছে। কিন্তু এরপরেও আমি শিক্ষার্থীদের পাশে থেকেছি। কখনো আপস করিনি, করবও না। জুলাই আন্দোলনেও সম্মুখসারিতে ছিলাম। এরপরেও আমি কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। শিক্ষার্থীরা আমার কাজ সম্পর্কে জানেন। তারাই তাদের যোগ্য প্রতিনিধিকে নির্বাচিত করবে।'
জয়ী হলে কী করবেন, জানতে চাইলে শাফায়েত বলেন, 'দেখুন, চাকসুর মেয়াদ এক বছর। আমি যদি বলি এই এক বছরে হল বানাব, পরিবহন-মেডিকেল-একাডেমিক সব সমস্যার সমাধান করে দেবো; কিন্তু বাস্তবে আমি কেন, কারো পক্ষেই এই সময়ে তা করে ফেলা সম্ভব হবে না। কিন্তু আমি শুরুটা করে দিয়ে যেতে পারব। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যাগুলো সামনে থেকে দেখছি। আমরা যেসব সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি, অন্য কাউকে যাতে সেগুলোর সম্মুখীন হতে না হয়, তা নিশ্চিতে কাজ করব। শুরুটা আমাদের মাধ্যমেই হবে, পরবর্তীতে যারা আসবেন, তারা সেটা চালিয়ে নিয়ে যাবেন।'
'অন্যদিকে, স্থানীয়দের সঙ্গে চবি শিক্ষার্থীদের যাতে কোনো ধরনের বৈরী সম্পর্ক না থাকে, সেই লক্ষ্যে একটি কমিটি গঠন করব। সেই কমিটি দুইপক্ষকে নিয়ে বসে যেকোনো সমস্যা সমাধানে কাজ করবে।'
চাকসু নিয়ে এই ছাত্রদল নেতা বলেন, 'চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অনেক দিক দিয়ে পিছিয়ে আছে। এর থেকে উত্তরণের উপায় ছাত্র সংসদ চালু রাখা। চাকসু নিয়মিত হলে সমস্যাগুলো সমাধান করা যাবে। চাকসু যাতে নিয়মিত হয়, আমি জয়ী হলে তা নিশ্চিত করব।'
নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে তিনি বলেন, 'আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা কালচার হচ্ছে, ছুটি শেষে ক্যাম্পাস খোলার দুই-তিন সপ্তাহ পর শিক্ষার্থীরা ফেরেন। এখন পূজার বন্ধের পর শিক্ষার্থীরা সেভাবে ফেরেননি। তাই নির্বাচনটা আরও চার-পাঁচদিন পর করলে ভালো হতো। কিন্তু প্রশাসন সেটা করেনি। তবে সার্বিকভাবে আমরা আশা করছি, প্রশাসন নিরপেক্ষভাবে সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করবে।'
ডাকসু ও জাকসু প্রসঙ্গে শাফায়েত বলেন, 'ওই দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিফলন আমরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখতে পাব না। এখানে শিক্ষার্থীরা ছাত্রদলকে বিজয়ী করবে বলে আমার বিশ্বাস।'
ছাত্রদলের প্যানেলের ব্যাপারে তিনি বলেন, 'আমার প্যানেলটা খুবই ইনক্লুসিভ। এখানে নারী আছেন, আদিবাসী আছেন, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী আছেন, গোল্ড মেডালিস্ট খেলোয়াড় আছেন। যিনি যে খাতে যোগ্য, তাকে আমরা সেখানে প্রার্থী হিসেবে দিয়েছি।'
সবশেষে শাফায়েত বলেন, 'আমি যেই দলেরই হই না কেন, নির্বাচিত হলে সব শিক্ষার্থীর প্রতিনিধি হবো, সবার জন্য কাজ করব। সব কাজে দল নয়, সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বার্থ অগ্রাধিকার পাবে। শিক্ষার্থীদের জন্যই কাজ করে যাব।'
Comments