শিক্ষার্থীদের সমস্যা, ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা ও বৈষম্য দূরীকরণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ডাকসুর এজিএস প্রার্থীরা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) অন্যতম প্রধান গুরুত্বপূর্ণ পদ সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস)। এবারের নির্বাচনে এই পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২৫ জন প্রার্থী।

প্রার্থীরা সবাই শিক্ষার্থীদের অধিকার, ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা, বৈষম্য দূরীকরণ এবং গণতান্ত্রিক ও শিক্ষার্থী–বান্ধব বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের অঙ্গীকার করছেন।

দ্য ডেইলি স্টার আটজন এজিএস প্রার্থীর সঙ্গে কথা বলে শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা ও বাস্তবতার আলোকে তাদের ভাবনা ও অঙ্গীকারের কথা জেনেছে যার প্রতিফলন ঘটতে পারে সামনের দিনগুলোতে।

নিরাপদ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ক্যাম্পাসের অঙ্গীকার অদিতির

দর্শন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী অদিতি ইসলাম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন অপরাজেয় '৭১–অদম্য '২৪ প্যানেল থেকে। তিনি নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিয়ে বলেন, "নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমার প্রথম দায়িত্ব। এক্ষেত্রে প্রশাসন ব্যর্থ হলেও আমি জয়ী হলে আইনগত ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিয়ে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করব।"

এই প্রার্থীর প্রতিশ্রুতি—নতুন ছাত্রী হল নির্মাণ, ডাইনিং চালু রাখা, খাবারে ভর্তুকি নিশ্চিতকরণ, গবেষণা বাজেট বাড়ানো এবং ডাকসুকে গণতান্ত্রিকভাবে সক্রিয় করা। পাশাপাশি সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের জন্য হলভিত্তিক রিহার্সাল রুম এবং পারফর্মিং আর্টস–চারুকলার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো গড়ে তোলার কথাও বলেন তিনি।

অদিতি ইসলাম আরও বলেন, 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক জায়গা থেকে যেসব সংগঠন যুদ্ধাপরাধীদের, মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের এখানে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে ইতিহাসকে কলুষিত করায় ভূমিকা রাখছে, আমি পরিবেশ পরিষদ চালুর মাধ্যমে রাজনীতিকে তাদের অবাঞ্চিত করার উদ্যোগ নেবো।'

এছাড়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্বশাসন রক্ষা করে বিশ্ববিদ্যালয়কে পূর্ণাঙ্গ গবেষণামুখী প্রতিষ্ঠানে রুপান্তর করতে প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ এবং ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশ ও ডাকসুর অগণতান্ত্রিক ধারাগুলো সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এই এজিএস প্রার্থী।

আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ডাকসুতে নির্বাচিত হতে চান আরমানুল

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী আরমানুল হক 'স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য' প্যানেল হিসেবে ডাকসু নির্বাচনে এজিএস পদে লড়ছেন। ২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনেও সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তিনি। 'এবারের নির্বাচন আমার বিগত সময়ের আন্দোলনেরই ধারাবাহিকতা,' বলেন আরমান।

আবাসন সংকট নিরসনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, 'আমি জয়ী হলে প্রথম বর্ষ থেকেই বৈধ সিট নিশ্চিত করা হবে, যেন সিট সংকটকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা না যায়। পাশাপাশি শিক্ষক মূল্যায়ন ব্যবস্থা চালু করে জবাবদিহি নিশ্চিত করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস বাড়িয়ে রাত ৮টা পর্যন্ত চালু রাখা এবং শিক্ষার্থীদের পার্টটাইম কাজের সুযোগ সৃষ্টি করারও চেষ্টা করব।'

এছাড়া, হলের ক্যান্টিনের খাবারের মানোন্নয়ন ও যৌন হয়রানি প্রতিরোধ সেল গঠন তার অগ্রাধিকার।

প্রথম বর্ষ থেকেই শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন আন্দোলনে তিনি অংশ নিয়েছেন এবং সর্বদা রাজপথে থেকেছেন জানিয়ে আরমানুল বলেন, 'আমি আশা করি ভোটাররা হঠাৎ উঠে আসা কারও বদলে সেই প্রার্থীকেই বেছে নেবেন, যিনি শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের লড়াই করে যাচ্ছেন।'

বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আশরেফা

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী আশরেফা খাতুন 'বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ' প্যানেলের এজিএস প্রার্থী।

তিনি জানান, ২০১৯ সাল থেকে তিনি গণরুম–গেস্টরুম সংস্কৃতির বিরুদ্ধে আন্দোলন, টিএসসির শব্দদূষণ কমাতে দাবি এবং ছাত্রী হলের নিরাপত্তাহীনতা নিয়ে প্রশাসনের কাছে গেছেন অসংখ্যবার।

আশরেফা মনে করেন, শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের একমাত্র বৈধ কর্তৃপক্ষ ডাকসু। নির্বাচিত হলে তিনি ছাত্রী হলের নিরাপত্তা, আলো ও সিসিটিভি স্থাপন, একাডেমিক কাজে ডিজিটাল অ্যাপ ও স্মার্ট আইডি কার্ড চালু, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া অবকাঠামো উন্নয়ন, পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিত করা, শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

এছাড়াও, শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম, রাজনৈতিক দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকার অঙ্গীকার করেছেন আশরেফা।

তিনি আরও বলেন, 'একাত্তরকে যারা মুছে দিতে চায় তাদের বিরুদ্ধে দৃঢ় একটা অবস্থান থাকবে আমার পক্ষ থেকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক ইতিহাস রক্ষায় ডাকসুই আমার কণ্ঠকে বৈধতা দেবে।'

ক্যাম্পাসে সুস্থ একাডেমিক পরিবেশ চান মায়েদ

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী এবং জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্যানেলের এজিএস প্রার্থী তানভীর আল হাদি মায়েদ সক্রিয় ছিলেন জুলাই অভ্যুত্থানসহ বিগত সময়ের বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে।

তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন সংকট সমাধান, নারী-পুরু শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৈষম্য নিরসন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৮টি গবেষণা কেন্দ্রকে অ্যালামনাই–ফান্ডিংয়ের মাধ্যমে সক্রিয় করা এবং প্রশাসনের হস্তক্ষেপমুক্ত কার্যকর ডাকসু গঠন করবেন।

'আমি মনে করি ছাত্রদল যে ধরনের পরিবর্তিত ধারায় রাজনীতি করছে, শিক্ষার্থীরা তা দেখছে এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমাদের সাংগঠনিক একটা বোঝাপড়া তৈরি হয়েছে। আশা করি শিক্ষার্থীদের নির্বাচিত প্ল্যাটফর্ম ডাকসুতে আমাকে নির্বাচিত করে শিক্ষার্থীরা তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সরাসরি ভূমিকা রাখতে সাহায্য করবে,' বলেন মায়েদ।

শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবন ও সৃজনশীলতায় আগ্রহী করে তুলতে চান তাহমীদ

স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমীদ আল মুদ্দাসসীর চৌধুরীর মতে, শিক্ষার্থীদের আস্থা অর্জনে তার মূল শক্তি একাডেমিক, গবেষণা ও সহশিক্ষা কার্যক্রমে সক্রিয় উপস্থিতি।

তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে বিতর্কে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন, জাতীয় পর্যায়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করেছেন। একইসঙ্গে তিনি কখনো ক্ষমতাসীন ছাত্ররাজনীতির অংশ ছিলেন না, যা তাকে সহজে শিক্ষার্থীদের বিশ্বাস অর্জনে সহায়তা করেছে বলে মনে করেন এমফিলের এই শিক্ষার্থী।

তাহমীদ বলেন, 'আদর্শকেন্দ্রিক কাদা ছোড়াছুড়ির বাইরে গিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রকৃত সমস্যার সমাধানই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত।'

নির্বাচিত হলে তার অগ্রাধিকারের মধ্যে থাকবে—শিক্ষার্থীদের জন্য ডিজিটাল ফুড ক্রেডিট চালু, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম ধাপে ধাপে ডিজিটালাইজ করা, প্রক্টোরিয়াল টিমের অধীনে কুইক রেসপন্স ফোর্স গঠন করে নিরাপত্তা জোরদার।

'আমি চাই গবেষণা–নির্ভর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলতে। এজন্য বিভাগ ও গবেষণা কেন্দ্রে টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট, রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট ও ফেলোশিপ চালু করা যেতে পারে,' বলেন তিনি।

এই এজিএস প্রার্থী বলেন, 'গবেষণার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রণোদনা দিতে পারলে রাজনীতির বাইরেও তারা নতুন উদ্ভাবন ও সৃজনশীলতায় মনোযোগী হবে, যা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতির জন্য একসময় কল্যাণ বয়ে আনবে।'

ঢাবিকে 'ক্যাপাসিটি বিল্ডিং হাব' হিসেবে দেখতে চান মহিউদ্দীন

ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত 'ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট' প্যানেলের এজিএস প্রার্থী এমফিলের শিক্ষার্থী মুহা. মহিউদ্দীন খান মনে করেন তার সবচেয়ে বড় সক্ষমতার জায়গা হলো, একাডেমিক কার্যক্রম ও সক্রিয় রাজনীতির অভিজ্ঞতা—দুই দিকেই সক্রিয় থাকায় এ দুয়ের মাঝে ভারসাম্য আনতে পারবেন।

তিনি বলেন, 'আমার স্বপ্ন—ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে শুধু একটি একাডেমিক বা শুধু একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান নয়, বরং একটি ভারসাম্যপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করা। এখানে শিক্ষার্থীরা তাদের স্বপ্ন অনুযায়ী বেড়ে উঠবে। কেউ চাইলে রাজনীতি করবে, কেউ চাইলে একাডেমিয়ায় যাবে, আবার কেউ চাইলে সাহিত্য, বিতর্ক কিংবা অন্য কোনো দক্ষতার ক্ষেত্রে উৎকর্ষ অর্জন করবে।'

'ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়কে আমি দেখতে চাই একটি "ক্যাপাসিটি বিল্ডিং হাব" হিসেবে—যেখানে প্রত্যেক শিক্ষার্থী তার নিজের পথ বেছে নিতে পারবে এবং সেই পথে সাফল্য অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা পাবে। আমি বিশ্বাস করি, আমার অভিজ্ঞতা ও স্বপ্ন এই কাজকে বাস্তবে রূপ দিতে পারবে।'

তবে, নির্বাচিত হলে শিক্ষার্থীদের মূল সমস্যা আবাসন, নিরাপত্তা ও খাবারসংক্রান্ত ইস্যুগুলোকেই অগ্রাধিকার দেবেন মহিউদ্দীন।

ডাকসুকে ক্ষমতার হাতিয়ার নয়, শিক্ষার্থীদের মঞ্চ হিসেবে দেখতে চান জুবেল

বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর কেন্দ্রীয় নেতা ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ জাবির আহমেদ জুবেল এজিএস পদে লড়ছেন 'প্রতিরোধ পর্ষদ' থেকে।

তিনি মনে করেন ডাকসুর কখনোই ক্ষমতার অংশ হওয়া উচিত নয়। জুবেল বলেন, 'ডাকসুকে দখল করার মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের অধিকার হরণ করা হয়, আর এর প্রভাব পড়ে দেশের গণতান্ত্রিক অধিকারের ওপরও।'

নির্বাচিত হলে তিনি আবাসন সংকট নিরসন, ক্যান্টিনের খাদ্যের মান উন্নয়ন, যৌন হয়রানি প্রতিরোধ সেলের কার্যকর বাস্তবায়ন এবং নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে উদ্যোগ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। 'আমি নির্বাচিত না হলেও এই অন্যায়, দখলদারিত্ব, সন্ত্রাস ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে থাকব,' বলেন তিনি।

জুবেল আরও বলেন, 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে আরও গণতান্ত্রিক করতে হলে ডাকসুরকে সংস্কার করতে হবে। আমি মনে করি ডাকসুর পূর্ণ ক্ষমতা নির্বাচিত শিক্ষার্থী প্রতিনিধির হাতে দিতে হবে।'

প্রকৃত অর্থেই শিক্ষার্থীদের পক্ষে থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের দখলদারিত্ব এবং সন্ত্রাসের যে রাজনীতি সেই রাজনীতির বিরুদ্ধে আমি উচ্চকণ্ঠে কথা বলবো।

শিক্ষার্থীদের সংকট সমাধানই মহিউদ্দিন রনির অগ্রাধিকার

স্বতন্ত্র এজিএস প্রার্থী থিয়েটার অ্যান্ড পারফরমেন্স স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আবাসনসহ অন্যান্য মৌলিক সংকট সমাধানকে অগ্রাধিকার দিতে চান।

রনির প্রতিশ্রুতি, নির্বাচিত হলে তিনি আবাসন, পরিবহন, খাদ্য, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা সংকট দূর করতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যৌথ কর্মপরিকল্পনা নেবেন।

'এসব সমস্যার সমাধান করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে একটা আধুনিক ও শিক্ষার্থীবান্ধব প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার সময় এসেছে। এই সময়টাকে আমরা কাজে লাগাতে চাই,' বলেন তিনি।

নির্বাচনের পর ১০০ দিনের মধ্যে প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হলে তিনি পদত্যাগ করবেন বলেও ঘোষণা দেন।

রনির ভাষায়, 'সিম্প্যাথি নয়—ভোট দিন তাকেই, যিনি বাস্তবে শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায় করতে পারবেন।'

Comments

The Daily Star  | English

Hopes run high as DU goes to vote today

The much-anticipated Ducsu and hall union elections are set to be held today after a six-year pause, bringing renewed hope for campus democracy.

7h ago