সেশনজট নিরসন ও শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাস গড়াই অঙ্গীকার: আরিফুল্লাহ

নির্বাচিত হলে সেশনজট নিরসন ও শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাস গড়ার অঙ্গীকার করেছেন আসন্ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত 'সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট' প্যানেলের ভাইস প্রেসিডেন্ট (ভিপি) প্রার্থী আরিফুল্লাহ।
একইসঙ্গে জাকসু নির্বাচন নিয়মিত আয়োজনের বিষয়েও তার কঠোর অবস্থান ব্যক্ত করেছেন তিনি।
দ্য ডেইলি স্টারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফুল্লাহ বলেন, 'প্রতিবছর যেন জাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়—এটা আমাদের প্রথম অঙ্গীকার। আমরা চেষ্টা করব যেন প্রতিবছর জাকসু বাস্তবায়িত হয়।'
ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সমস্যার কথা উল্লেখ করে এই ভিপি প্রার্থী বলেন, 'আমাদের ক্যাম্পাসে অসংখ্য সমস্যা আছে। এর মধ্যে অনেক বিভাগে ভয়াবহ আকারের সেশনজট। যেমন, ফার্মেসিতে ৫ বছরের অনার্স শেষ করতে ৭ বছর লেগে যায়। প্রায় ১০-১১টা বিভাগে একই অবস্থা।'
'অন্যদিকে শিক্ষা ও গবেষণায় পর্যাপ্ত বরাদ্দ না থাকায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক র্যাংকিংয়ে পিছিয়ে পড়ছে। গবেষণায় গুরুত্ব দিলে র্যাংকিং উন্নত হবে,' বলেন তিনি।
ক্যাম্পাসের স্বাস্থ্যসেবা ও নিরাপত্তা ঘাটতি নিয়েও কথা বলেন আরিফুল্লাহ। 'প্রায় ২০ হাজার মানুষের জন্য নামমাত্র একটি মেডিকেল সেন্টার আছে, যেখানে প্রাথমিক চিকিৎসাও ঠিকমতো পাওয়া যায় না। মেয়েদের হলে ও ছেলেদের হলে চুরি হচ্ছে। সবমিলিয়ে নিরাপত্তা একটা বড় ইস্যু,' বলেন তিনি।
ডাইনিংয়ের নিম্নমানের খাবার, অভ্যন্তরীণ পরিবহন সমস্যা, শিক্ষকদের অবহেলা ও প্রাকৃতিক পরিবেশের অবক্ষয়সহ নানা সমস্যা তিনি চিহ্নিত করেন।
প্যানেলের ইশতেহারের প্রসঙ্গ তুলে ছাত্রশিবিরের এই নেতা বলেন, 'আমরা ৫টি বিষয়কে "ইয়েস" বলব। সেগুলো হলো—প্রতিবছর জাকসু নির্বাচন, ডাইনিংয়ে পর্যাপ্ত ও মানসম্পন্ন খাবার নিশ্চিত করা, পূর্ণাঙ্গ অটোমেশন সিস্টেম চালু, পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল প্রতিষ্ঠা ও অভ্যন্তরীণ পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন।'
'আমরা ৫টি বিষয়কে "নো" বলব। সেগুলো হলো—মাদক ও চাঁদাবাজি নির্মূল, "লাঞ্চের পরে আসেন" চর্চা বন্ধ, র্যাগিং ও সাইবার বুলিংয়ের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স, ক্যাম্পাসের প্রাণপ্রকৃতি রক্ষা, এবং ক্লাস নিয়ে শিক্ষকদের অবহেলা বন্ধ করে সেশনজট নিরসন,' যোগ করেন এই ভিপি প্রার্থী।
নিজেদের প্যানেলের বর্ণনা দিয়ে আরিফুল্লাহ বলেন, 'আমরা মোট ২৫ জনের পূর্ণাঙ্গ প্যানেল দিয়েছি। এর মধ্যে জুলাই আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থী আছেন, ৬ জন নারী শিক্ষার্থী আছেন। আমাদের জিএস প্রার্থী বিএনসিসিতে কাজ করেছেন, স্বাস্থ্য সম্পাদক দীর্ঘদিন নিরাপদ খাদ্য আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন, পরিবহন সম্পাদক বাস চলাচল নিয়ে কাজ করেছেন, নারী এজিএস প্রার্থী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি ছিলেন।'
তিনি বলেন, 'জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের পর অনেকে নেতা বনে গেছেন। অনেক সমন্বয়কের নৈতিক স্খলন আমরা দেখেছি। নেতৃত্বের জন্য সততা জরুরি। আমাদের সংগঠন সততা, দক্ষতা ও যোগ্যতাকে ভিত্তি করে গড়ে তুলছে। আমরা ব্যক্তিকেন্দ্রিক রাজনীতি করি না, সংগঠনভিত্তিক রাজনীতি করি।'
নির্বাচন নিয়ে কোনো সংশয় আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'এখন পর্যন্ত আমরা কোনো সমস্যা দেখিনি। আশা করি ১১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার দেবে।'
Comments