শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে কাজ করব যেন বঞ্চনার শিকার না হয়: নূর উদ্দিন আবির

নূর উদ্দিন আবির। ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচিত হলে শিক্ষার্থীদের বঞ্চনা ও শোষণ থেকে রক্ষা করতে তাদের অধিকার নিয়ে কাজ করবেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সমর্থিত 'ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম' প্যানেলের সহ-সভাপতি প্রার্থী শেখ নূর উদ্দিন আবির।

দ্য ডেইলি স্টারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই প্রার্থী মনে করেন, দীর্ঘ ৩৫ বছর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া রাকসু নির্বাচন রাবি শিক্ষার্থীদের জন্য এক অনন্য প্রাপ্তি, যেখানে শিক্ষার্থীরা উৎসবমুখর পরিবেশে তাদের পছন্দের শিক্ষার্থীদের নির্বাচিত করতে পারবেন। 

আবির বলেন, 'এর আগেও বিভিন্ন সময় রাকসুর দাবি উঠেছিল, কিন্তু আমরা এবার সেটা পাচ্ছি। সে কারণে আমরা সৌভাগ্যবান বলতে হবে। এখন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছি, তারা বিরক্ত না হলে আমাদের সঙ্গে খুব উৎফুল্লভাবে কথা বলছেন।'

'আমি ২০১৮ সালে ভর্তি পর থেকেই শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে কাজ করে যাচ্ছি। বর্তমানে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সিট দখল-বাণিজ্যসহ আধিপত্যের পরিবেশের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছি। এ কারণে হামলা-মামলার শিকারও হয়েছি। অনার্স পরীক্ষার পর তারা আমাকে পিটিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দিয়েছিল,' বলেন তিনি।

ছাত্রদলের এই নেতা বলেন, 'গত ৫ আগস্টের পর আমি মাস্টার্সে ভর্তি হওয়ার পর চিন্তা করেছি, আমি যে অধিকার বঞ্চিত হয়েছি, অন্য শিক্ষার্থীরা যেন এভাবে আর শোষণের শিকার না হয়। তখন উপলব্ধি করলাম যে রাকসুতে প্রার্থী হয়ে শিক্ষার্থীদের সমর্থন নিয়ে তাদের অধিকার নিয়ে কাজ করব।'

জয়ী হলে কী করবেন জানতে চাইলে এই ভিপি প্রার্থী বলেন, 'আমাদের কাজ হবে অধিকার আদায় করে নেওয়া। অনেকে অনেক কিছু করার কথা বলছে। কিন্তু আমি জানি রাকসুর কাজ টাকা দেওয়া না, বরং শিক্ষার্থীদের অধিকার সচেতন করা এবং প্রাপ্য অধিকারটুকু বুঝিয়ে দেওয়া।'

'আমার পরিকল্পনার মধ্যে আছে মেডিকেল সেন্টার আধুনিকায়নে প্রশাসনকে চাপ দেওয়া। আমাদের প্রায় ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী অনাবাসিক, অথচ হলে সিট পাওয়া তাদের অধিকার। আমি নির্বাচিত হলে প্রশাসনকে চাপ দিয়ে শিক্ষার্থীদের সিট নিশ্চিত করার রোডম্যাপ চাইব। আর যতদিন পর্যন্ত এটা নিশ্চিত না হবে ততদিন পর্যন্ত আবাসন ভাতার ব্যবস্থা করতে বলব,' বলেন তিনি।'

নির্বাচনের সার্বিক পরিবেশ প্রসঙ্গে এই ভিপি প্রার্থী বলেন, 'আশাবাদী হলেও পুরোপুরি সন্তুষ্ট নই নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে। নির্বাচন কমিশনের গা ছাড়া ভাব দেখচি। আচরণবিধি নিয়ে তারা কঠোর হতে পারছে না। নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হলে বা পক্ষপাতমূলক আচরণ দেখলে আমরা কঠোরভাবে প্রতিরোধ করব।'

ডাকসু-জাকসুতে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের জয়ের পর কোনো চাপ অনুভব করছেন কি না, জানতে চাইলে আবির বলেন, 'শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে প্রকৃতপক্ষে আমাদের আশা বাড়ছে। সবার কাছ থেকে একটা ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছি। আই বলতে চাই, ক্রিকেটে যেমন মেলবোর্ন আর মিরপুরের পিচ যেমন এক না, তেমনি এক্ষেত্রেও বলতে চাই পরিস্থিতি, সময় ও পরিবেশভেদে কী হবে তা এখনই বলার সময় নয়। শিক্ষার্থীরাই ব্যালটের মাধ্যমে এর জবাব দেবেন।'

ছাত্রদল সমর্থিত 'ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম' প্যানেল সম্পর্কে তিনি বলেন, 'যিনি যে ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ ও প্রতিভাবান তাকেই আমরা সেই পদের প্রার্থী করার চেষ্টা করেছি। যেমন আমাদের ক্রীড়া সম্পাদক প্রার্থী জাতীয় নারী ফুটবল দলের সদস্য, পরিবেশ সম্পাদক প্রার্থী পরিবেশবাদী সংগঠনে কাজ করেন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক প্রার্থী বাংলাদেশের প্রতিনিধি হয়ে একটা অনুষ্ঠানে চীন যাচ্ছেন, নারী বিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী ডিনস অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী, নাট্যকর্মীকে সাংস্কৃতিক সম্পাদক প্রার্থী করেছি, সহ-সম্পাদক প্রার্থীও একটি ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা। আমি মনে করি বৈচিত্র্যময় প্যানেল করেছি এবং সঠিক জায়গায় সঠিক প্রার্থী দিয়েছি। নিশ্চয়ই ভালো ফলও পাব।'

'আমার নিজের শক্তি একটাই যে আমি সবসময় শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করেছি। অধিকার আদায় করতে গিয়ে নির্যাতিত হয়েছি। এখন পর্যন্ত আমি নৈতিক চরিত্র ঠিক রেখে আমি নেতা নয়, বন্ধু হয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিশে যাচ্ছি। ছাত্রবন্ধু শব্দটাই আমার স্ট্রেংন্থ,' বলেন এই ছাত্রনেতা।

Comments

The Daily Star  | English
gold price rises in Bangladesh

Gold shines through 2025 amid price volatility

If there were a “metal of the year” award, gold would be a strong contender, maintaining an exceptional run even on the final trading day of 2025..Businesspeople said the retail gold market in Bangladesh has remained unstable over the past few months, driven by fluctuating global prices, s

Now