উ. কোরিয়ার সেনাদের আত্মত্যাগ কখনো ভুলব না: পুতিন

বৈঠক শেষে পুতিন ও কিম। ছবি: রয়টার্স
বৈঠক শেষে পুতিন ও কিম। ছবি: রয়টার্স

রুশ সেনাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে লড়েছেন উত্তর কোরিয়ার সেনারা। অনেকে হতাহত হয়েছেন। তবে তাদের সবাই যুদ্ধক্ষেত্রে দেখিয়েছেন অশেষ বীরত্ব ও সাহসিকতা। বিশেষত, অধিকৃত কুরস্ক অঞ্চল থেকে ইউক্রেনের সেনাদের হঠাতে বড় ভূমিকা রেখেছে কিম জং উনের বাহিনী।

বেইজিংয়ে কিমের সঙ্গে বৈঠকে উত্তর কোরীয় সেনাদের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন রুশ নেতা ভ্লাদিমির পুতিন। ধন্যবাদ জানিয়েছেন কিমকে। বলেছেন, আপনার সেনারা 'বীরের মতো লড়েছে'।

আজ বুধবার এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি।

কিম-পুতিনের বন্ধুত্ব

পুতিন ওই বৈঠকে দুই দেশের 'ভরসা ও বন্ধুত্বের' প্রশংসা করেন। তিনি এটাও বলেন রাশিয়ায় সেনা পাঠানোর প্রস্তাবটি কিম নিজেই দিয়েছিলেন।

২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে হামলা করার পর একঘরে হয়ে পড়ে রাশিয়া। সে সময় মস্কোর দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেয় পিয়ংইয়ং।

কিম-পুতিনের বৈঠক। ছবি: এএফপি
কিম-পুতিনের বৈঠক। ছবি: এএফপি

হাজারো সেনা ও কন্টেইনারভর্তি অস্ত্র পাঠিয়ে পশ্চিম রাশিয়া থেকে কিয়েভের সেনাদের 'ভাগিয়ে' দেওয়ার উদ্যোগে ইন্ধন যোগান কিম।

এর আগে ক্রেমলিনকে বিস্মিত করে কিয়েভের সেনারা রাশিয়ার ওই ক্ষুদ্র অংশের দখল নিয়ে নেয়, যা যুদ্ধের মূল প্রবাহের বিপরীতে যায়।

বৈঠকের শুরুতে পুতিন বলেন, 'আমরা সবাই জানি, আপনার উদ্যোগে আপনার বিশেষায়িত বাহিনী কুরস্ক অঞ্চলকে স্বাধীন করার সংগ্রামে অংশ নেয়।'

'এটা আমাদের নতুন চুক্তি মেনেই করা হয়েছে। আমি উল্লেখ করতে চাই, আপনার সেনারা সাহসিকতা ও বীরত্বের সঙ্গে লড়েছে', যোগ করেন পুতিন।

তিনি আরও বলেন, 'আপনার সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য ও তাদের আত্মীয়দের আত্মত্যাগ আমরা কখনো ভুলব না।'

গত বছর মস্কো-পিয়ংইয়ং একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি করে। এই চুক্তি ন্যাটো জোটের শর্তের আদলে করা হয়। অর্থাৎ, তৃতীয় কোনো পক্ষ হামলা করলে তারা একে অপরকে সুরক্ষা দেবে।

বেইজিংয়ের ঐ বৈঠকের স্থায়িত্ব ছিল আড়াই ঘণ্টা।

আলোচনার পর কিম জংকে তার গাড়ি পর্যন্ত এগিয়ে দেন পুতিন। বিদায়বেলায় দুই নেতা হাত মেলান, একে অপরকে জড়িয়ে ধরেন।

এরপর পুতিন, কিমকে রাশিয়া সফরের আমন্ত্রণ জানান।

বৈঠক শেষে একে অপরকে জড়িয়ে ধরেন কিম ও পুতিন। ছবি: এএফপি
বৈঠক শেষে একে অপরকে জড়িয়ে ধরেন কিম ও পুতিন। ছবি: এএফপি

রুশ নেতা বলেন, 'আমরা আপনার অপেক্ষা আছি।'

২০২৩ সালে সর্বশেষ রাশিয়া সফর করেন কিম। তিনি উত্তর কোরিয়া ছেড়ে বের হন না বললেই চলে। একটি সশস্ত্র ট্রেনে করে তিনি বেইজিং এসেছেন।

'ষড়যন্ত্র'

আজ বুধবার চীনে ২০টির বেশি দেশের নেতার সঙ্গে সামরিক কুচকাওয়াজে যোগ দেন কিম ও পুতিন। আনুষ্ঠানিকভাবে এই কুচকাওয়াজ বা প্রকারান্তরে, মহড়ার পেছনের কারণ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের আত্মসমর্পণের ৮০ বছর পূর্তি।

তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এই কুচকাওয়াজ পশ্চিমা বিশ্বের বিরোধিতাকারী পরাশক্তিদের সমবেত হওয়ার একটি উপলক্ষ মাত্র। সেখানে চীনের শি জিনপিং, রাশিয়ার পুতিন, ভারতের নরেন্দ্র মোদি ও উত্তর কোরিয়ার কিম জং উনের মতো প্রভাবশালী নেতারা উপস্থিত ছিলেন এবং তারা একে অপরের সঙ্গে বৈঠকেও যোগ দেন।

চীনের সামরিক কুচকাওয়াজে পুতিন, কিম ও শি জিনপিং। ছবি: এএফপি
চীনের সামরিক কুচকাওয়াজে পুতিন, কিম ও শি জিনপিং। ছবি: এএফপি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অভিযোগ, 'পুতিন, কিম ও শি জিনপিং যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার জন্য বেইজিংয়ে জমায়েত হয়েছে।'

 

Comments

The Daily Star  | English

Farewell

Nation grieves as Khaleda Zia departs, leaving a legacy of unbreakable spirit

8h ago