শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানে রাবিতে কুইক রেসপন্স টিম করব: সালাউদ্দিন আম্মার

জয়ী হলে শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানে ক্যাম্পাসে কুইক রেসপন্স টিম গঠন করবেন বলে জানিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী সালাউদ্দিন আম্মার।
দ্য ডেইলি স্টারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে 'আধিপত্যবিরোধী ঐক্য' প্যানেলের এই জিএস প্রার্থী বলেন, 'শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে বরাবরই আমি আন্দোলন-সংগ্রাম করে আসছি। শিক্ষার্থীদের হয়ে কাজ করতে চাই বলেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি। ক্যাম্পাসে আসার পর থেকেই ন্যায্য অধিকারের পক্ষে ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলছি, লড়াই করছি।'
তিনি বলেন, 'শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে কথা বলার জায়গায় বিন্দু পরিমাণ ছাড়ও দিইনি। শিক্ষার্থীরা যদি আমাকে তাদের প্রতিনিধি হিসেবে বেছে নেয়, অবশ্যই তাদের অধিকার জন্য যা যা প্রয়োজন তা আমি করব।'
'এ ছাড়া, প্রায় ৩৫ বছর পর রাকসু হচ্ছে। আমরা যারাই এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি, সবাই ইতিহাসের অংশ হতে চাইছি বলেই নির্বাচনে দাঁড়িয়েছি। আমি মনে করি, যারা নির্বাচনে দাঁড়িয়েছে, তারা সবাই বেস্ট। কারণ, এত শিক্ষার্থীর মধ্যে তারা নির্বাচনে দাঁড়ানোর সাহস করেছেন। এখন শিক্ষার্থীরাই ব্যালটের মাধ্যমে তাদের যোগ্য প্রতিনিধি নির্বাচিত করবে বলে আমার বিশ্বাস।'
জয়ী হলে কী করবেন—জানতে চাইলে সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, 'নির্বাচিত হলে সবার আগে আমি শিক্ষার্থীদের জন্য একটি কুইক রেসপন্স টিম গঠন করব। বাছাই করা ৫০-১০০ জনকে নিয়ে একটি টিম হবে। শিক্ষার্থীরা যখনই কোনো সমস্যায় পড়বেন, তারা হটলাইন নম্বরে যোগাযোগ করবেন। এই টিম সর্বোচ্চ দ্রুততার সঙ্গে রেসপন্স করবে এবং শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় সাপোর্ট দেবে।'
'অন্যদিকে রাবি শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি পড়ে পরিবহন সংক্রান্ত সমস্যায়। মূল গেট থেকে চারুকলায় ভাড়া ২০-২৫ টাকা। এটা শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক বেশি। আমরা ইলেকট্রিক ভেহিকল চালু করব। প্রত্যেকটি প্রবেশপথ, বিভাগ, হলের সামনে প্রয়োজন মতো পরিবহন থাকবে। শিক্ষার্থীরা আইডি কার্ড দেখিয়ে ৫ টাকার বিনিময়ে সেগুলোতে চড়তে পারবে।'
তিনি আরও বলেন, 'শিক্ষার্থীদের আরেকটি গুরুতর সমস্যা খাবারের মান। শিক্ষার্থীরা নিজেরা রান্না করতে গেলে যদি জিনিসপত্র কিনতে যায়, সেগুলোর দাম খুব বেশি থাকে। আমরা মূল দু-তিনটা জায়গায় দোতলা বা তিনতলা বিশিষ্ট সুপারশপ করতে চাই। শিক্ষার্থীরা আইডি কার্ড দেখিয়ে সেখান থেকে সুলভ মূল্যে প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে পারবে। পাশাপাশি একটা অ্যাপ নিয়ে কাজ করতে চাই, যার মাধ্যমে সবকিছু ডিজিটালাইজেশনের আওতায় আনা যাবে।'
'আমি যদি নির্বাচিত হতে পারি, তাহলে শিক্ষার্থীদের জন্য এই কাজগুলোসহ আরও মৌলিক সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করব। নির্বাচিত না হলে যারা নির্বাচিত হবেন, তাদের সঙ্গে আমার পরিকল্পনাগুলো শেয়ার করব। তারা চাইলে শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে সেগুলো বাস্তবায়ন করবেন।'
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক এই সমন্বয়ক বলেন, 'রাকসু নিয়মিত রাখা শিক্ষার্থীদের অধিকার। প্রায় ৩৫ বছর পর রাকসু ফিরে পেলাম, এটাকে একটা উৎসব হিসেবে দেখতে চাই। যারাই নির্বাচিত হয়ে আসবেন, রাকসু যাতে নিয়মিত হয়, সেটা অবশ্যই তাদের নিশ্চিত করতে হবে। আমি যদি নির্বাচিত হই, তাহলে লক্ষ্য থাকবে এরপরের রাকসু অনুষ্ঠিত হওয়ার ব্যাপারটা নিশ্চিত করে পরবর্তী জয়ীদের হাতে দায়িত্ব হস্তান্তর করা।'
নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে আম্মার বলেন, 'রাকসু নির্বাচন নিয়ে শিক্ষার্থীরাও উচ্ছ্বসিত। আমরা তাদের কাছ থেকে যথেষ্ট পরিমাণ সাড়া পাচ্ছি। কিন্তু নির্বাচনের আগ মুহূর্তে পোষ্য কোটা নিয়ে যে আন্দোলন, সেটা নিয়ে এক ধরনের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। ঐক্যবদ্ধভাবে সব শঙ্কা মোকাবিলা করে আমরা চাইব, যাতে নির্ধারিত সময়ে রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।'
Comments