এক ইনিংসে ‘তিন জীবনের’ অভিজ্ঞতা আগে হয়নি ইংল্যান্ডকে জেতানো নাইটের

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয়ের সম্ভাবনার মাঝে দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন হিদার নাইট। তিনিই অপরাজিত ৭৯ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচ শেষ করে দেন। তবে তাকে থামানোর সুযোগ এসেছিলো বাংলাদেশের সামনে। কিন্তু কিছুটা বিতর্কের জন্ম দেওয়া সিদ্ধান্তে আউট হতে হতেও একাধিকবার বেঁচে যান তিনি। অভিজ্ঞ ব্যাটার জানান এমন সৌভাগ্যর সামনে আগে পড়েননি তিনি।

গতরাতে গৌহাটিতে আইসিসি নারী বিশ্বকাপের ম্যাচে অল্প পুঁজি নিয়েও ম্যাচ জমিয়ে তুলেছিলো বাংলাদেশ। পেসার মারুফা আক্তার শুরুতেই তুলে নেন দুই ওপেনারকে। তিনে নামা হিদারও ফিরতে পারতেন শুরুতে।

মারুফার বলে শূন্য রানে থাকা নাইটের কট বিহাইন্ডের আবেদনে সাড়া দেন মাঠের আম্পায়ার। দ্রুত রিভিউ নেন নাইট। টিভি আম্পায়ার রিপ্লে দেখে ব্যাটে লাগার 'সুনির্দিষ্ট প্রমাণ' পাননি। বল প্যাডে লাগলেও ব্যাটে লেগেছিলো কিনা রিপ্লেতে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ফলে সিদ্ধান্ত উল্টে বেঁচে যান ইংলিশ ব্যাটার।

১৫তম ওভারে ১৩ রানে থাকার সময় আসে বিতর্কিত মুহূর্ত। ফাহিমা খাতুনের বলে মিড অফে ক্যাচ উঠান নাইট। দারুণ ক্ষিপ্রতায় বল মুঠোয়  ধরে উল্লাসে মাতেন স্বর্ণা আক্তার। মাঠের আম্পায়ার কোন সিদ্ধান্ত দিচ্ছিলেন না, তিনি আশ্রয় নেন টিভি আম্পায়ারের।  হিদার নিজে আউট ভেবে হাঁটা ধরেন, নতুন ব্যাটারও প্রস্তুত হয়ে মাঠে প্রবেশ করছিলেন।

কিন্তু টিভি আম্পায়ার গায়ত্রী ভেনুগোপালন রিপ্লে দেখে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাননি। দুইটি অ্যাঙ্গেলেই বল মাটিতে লেগেছিলো কিনা পরিস্কার হয়নি। সংশয় থাকায় বেনিফিট অব ডাউট যায় ব্যাটারের দিকে।

এর আগে শুরুতে একবার এলবিডব্লিউর আবেদনে তার বিরুদ্ধে সাড়া দিয়েছিলেন আম্পায়ার, রিভিউ নেওয়ার পর দেখা যায় বল স্টাম্প মিস করে যাচ্ছে।

ম্যাচ শেষে নাইট বলেন,  'এক ইনিংসে তিনবার বাঁচা—এর আগে এমনটা কখনও হয়নি আমার সঙ্গে। নতুন অভিজ্ঞতা বলতে হবে। আমি ভেবেছিলাম বলটা ক্যাচ হয়েছে এবং ন্যায্যভাবেই আউট ধরে নিয়েছি, তাই হাঁটতে শুরু করেছিলাম। কিন্তু তৃতীয় আম্পায়ার অন্য সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।'

এই 'বাঁচা'টাই শেষ পর্যন্ত ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। নাইট ইংল্যান্ডের হয়ে ১৭৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে ৭৫ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়েন চার্লি ডিনের সঙ্গে। ততক্ষণে চারবারের চ্যাম্পিয়নরা ৩০তম ওভারে ১০৩ রানে ছয় উইকেট হারিয়ে বিপদে ছিল।

রান তাড়ার অভিজ্ঞতা নিয়ে নাইট বলেন, 'আমরা নিজেরাই কাজটা একটু কঠিন করে ফেলেছিলাম, কিন্তু বিশ্বকাপে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো জেতা। শুরুটা একদম সহজ ছিল না… বাংলাদেশ অনেক হুমকি তৈরি করেছিল।'

বাংলাদেশের তরুণ পেসার মারুফা আক্তারের প্রশংসাও করেন নাইট, 'সে দারুণ বোলার। ওর লেট ইনসুইং বলগুলো আমাদের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ ছিল শুরুতেই। ভাগ্যক্রমে আমি কয়েকবার বেঁচে গিয়েছি।'

এই জয়ে ইংল্যান্ড টুর্নামেন্টে টানা দ্বিতীয় জয় পেল, আর বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো হারের মুখ দেখল, তবুও তাদের লড়াকু মনোভাব আবারও প্রশংসা কুড়িয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English
The Costs Of Autonomy Loss of Central Bank

Bangladesh Bank’s lost autonomy has a hefty price

Economists blame rising bad debt, soaring prices and illicit fund flows on central bank’s waning independence

12h ago