ডাকসু নির্বাচন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে নিরাপদ ক্যাম্পাসে রূপান্তরে কাজ করব: আবিদুল ইসলাম

আবিদুল ইসলাম খান। ছবি: স্টার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে সহ-সভাপতি (ভিপি) নির্বাচিত হলে ঢাবিকে নিরাপদ ক্যাম্পাসে রূপান্তরে কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল মনোনীত প্যানেলের প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান।

দ্য ডেইলি স্টারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পর ২০১৬ সালে নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে হল থেকে বের হয়ে গিয়েছিলাম। সেই সময় রাজনীতি সম্পর্কে আমার তেমন কোনো ধারণা ছিল না। কিন্তু, এই যে রাজনৈতিক নির্যাতন-নিপীড়ন-অপসংস্কৃতি, প্রতিজ্ঞা করেছিলাম এগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করব। তখন থেকেই লড়াই শুরু। কোটাবিরোধী আন্দোলনকে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে রূপ দেওয়া এবং সক্রিয়ভাবে আন্দোলন করেই থেমে থাকিনি। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টে পর ৬ আগস্ট থেকেই মসজিদ-মন্দিরসহ রাজপথে পাহারা দিয়েছি রাষ্ট্রকে স্থিতিশীল রাখতে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায় এবং অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে কণ্ঠ জারি রাখতে দীর্ঘ সময় ধরে মাঠে আছি। রাজনৈতিক অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেই আমাদের বেড়ে ওঠা।

'সেই প্রজ্ঞা থেকেই ডাকসু নির্বাচনে দাঁড়িয়েছি। কারণ ডাকসু কেবল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপার নয়, গোটা বাংলাদেশের ব্যাপার। রাষ্ট্রের এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে রাষ্ট্রের স্বার্থে ডাকসুকে লিড করার জন্য নির্বাচনে দাঁড়িয়েছি। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে যারা শিক্ষার্থীদের পাশে ছিল, অধিকার আদায়ে যারা সংগ্রাম চালিয়ে গেছে, যাদের সাহসের ওপর বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা টিকে আছে, শিক্ষার্থীরা ঠিকই তাদের খুঁজে নেবে।'

ডাকসু নির্বাচনের ফলাফলের প্রভাব জাতীয় নির্বাচনে পড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ডাকসু নির্বাচনে কে জিতল বা হারল, সেটার প্রভাব জাতীয় নির্বাচনে পড়বে না যদি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য ভোট হয়। কিন্তু এই বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক যে ইতিহাস, এখান থেকেই ফ্যাসিবাদ-বিরোধী আন্দোলনের শুরু, ডাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে সেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ আসছে। তাই আশা করছি ডাকসুর মাধ্যমেই সুন্দর একটি নির্বাচনের সূচনা হবে, সঠিক গণতান্ত্রিক চর্চার সুযোগ আসবে।

নির্বাচিত কলে কী করবেন, চানতে চাইলে এই ছাত্রদল নেতা বলেন, আমার মূল কাজ হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি পরিপূর্ণ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করা। নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে শিক্ষার্থীরা এখানে আসেন। যথাযথ সুযোগ-সুবিধার অভাবে অনেকে চার-পাঁচটা করেও টিউশনি করেন। এসব প্রেশারের কারণে পরীক্ষার ফল খারাপ হয়। আমরা শিক্ষার্থীদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতে কাজ করব। অন-ক্যাম্পাস জবের সুযোগও তৈরি করব।

'পাশাপাশি নারীদের প্রতি বৈষম্য দূর করতে কাজ করব। রাত ১০টা বাজলেই তাদের হল বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরিচয়পত্র দেখিয়েও যেকোনো প্রয়োজনে তারা বান্ধবীদের হলে যেতে পারেন না। পাশাপাশি স্নাতকোত্তর শেষ করার পরপরই নারীদের হল ছাড়তে হয়। তৎক্ষণাৎ তারা কোথায় গিয়ে উঠবে? আরও অন্তত ছয় মাস যাতে তাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়, সেটা নিশ্চিত করব। মোদ্দা কথা আমরা নারীদের জন্য ক্যাম্পাসকে নিরাপদ করে তুলব। এই ক্যাম্পাসে ছেলে-মেয়ে যাতে সমান সুযোগ-সুবিধা পায়, তা নিশ্চিত করব। কারণ এই ক্যাম্পাস সকলের, এখানে কোনো ধরনের বৈষম্য চলবে না। সর্বোপরি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে নিরাপদ ক্যাম্পাসে রূপান্তরে কাজ করব।'

নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে আবিদুল বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকগুলো গ্রুপ আছে যেগুলো থেকে প্রতিনিয়ত ভুল তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। আমরা প্রশাসনকে জানিয়েছি। তারাও বিটিআরসিকে নির্দেশ দিয়েছেন। গ্রুপগুলো নাম পরিবর্তন করে ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে। প্রশাসন যদি তা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে, তাহলে নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাবে।

সবশেষ তিনি বলেন, আগেও মজলুম ছিলাম, এখনো আছি। বারবার আমাদের ওপর জুলুম করা হয়েছে। আমরা প্রকাশ্যেই ছাত্রদল করেছি। এজন্য ক্যাম্পাসটা ছিল আমাদের জন্য মরুভূমি। এই গণঅভ্যুত্থানে আমাদের বৃহৎ অংশীদারত্ব ছিল। গণতন্ত্র-মানবাধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য এখনো রাজপথে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। এটা লড়াই অব্যাহত থাকবে।

Comments

The Daily Star  | English
gold price rises in Bangladesh

Gold shines through 2025 amid price volatility

If there were a “metal of the year” award, gold would be a strong contender, maintaining an exceptional run even on the final trading day of 2025..Businesspeople said the retail gold market in Bangladesh has remained unstable over the past few months, driven by fluctuating global prices, s

8m ago