চূড়ান্ত তালিকা ঘোষণার ৭ দিন পর অমর্ত্যের প্রার্থিতা বাতিল করল প্রশাসন

চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের সাত দিন পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে 'সম্প্রীতির ঐক্য' প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) পদপ্রার্থী অমর্ত্য রায় জনের প্রার্থিতা বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন।
আজ শনিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনিরুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হওয়া ও আ ফ ম কামালউদ্দিন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী অমর্ত্য রায় জনকে জাকসু গঠনতন্ত্রের চার ও আট ধারা অনুযায়ী ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার জন্য অযোগ্য বিবেচিত হওয়ায় তার নাম ভোটার ও প্রার্থী তালিকা থেকে প্রত্যাহার করা হলো।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও স্বাক্ষর করেছেন নির্বাচন কমিশনের সদস্য সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক একে এম রাশিদুল আলম, সদস্য অধ্যাপক এম মাফরুহী সাত্তার ও অধ্যাপক লুৎফুল এলাহী।
তবে কমিশনের আরেক সদস্য অধ্যাপক রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা এতে স্বাক্ষর করেননি। এ নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'অসুস্থ থাকায় আমি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন৷ মিটিংয়ে উপস্থিত ছিলাম না, তাই স্বাক্ষর করতে পারিনি৷'
গত ১৭ আগস্ট কমিশন জাকসু নির্বাচনের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করে৷ এরপর ২৫ আগস্ট খসড়া এবং ২৯ আগস্ট চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে৷ সেখানে অমর্ত্য রায়ের নাম ছিল৷
এ নিয়ে জানতে চাইলে রাশিদুল আলম বলেন, 'সকালে সিন্ডিকেট থেকে জানানো হয়েছে যে, অমর্ত্য নিয়মিত শিক্ষার্থী নন। জাকসু সংবিধান অনুযায়ী অনিয়মিত শিক্ষার্থীরা ভোটার বা প্রার্থী হতে পারেন না। তাই তার প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে।'
চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের সাত দিন পর কেন এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আজ সিন্ডিকেট থেকে জানানো হয়েছে।'
তিনি সিন্ডিকেটের কোনো সদস্যকে প্রশ্ন করার পরামর্শ দেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিন্ডিকেটের এক সদস্য বলেন, 'গত বৃহস্পতিবার সিন্ডিকেটে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। ১১ আগস্ট অমর্ত্য যখন মাস্টার্স প্রোগ্রামে আবেদন করেন, তখন একাডেমিক কাউন্সিল ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তর দেখতে পায়, তিনি স্নাতক ডিগ্রি শেষ করতে পারেননি। স্নাতক চূড়ান্ত পরীক্ষা ৪০৮ নম্বর কোর্সে তিনি দুইবার অকৃতকার্য হয়েছেন। একাডেমিক কাউন্সিল তাকে বিশেষ বিবেচনায় বিশেষ পরীক্ষার সুপারিশ করেছে। এ ধরনের শিক্ষার্থীদের অনিয়মিত ধরা হয়। আমরা নির্বাচন কমিশনকে বিষয়টি জানিয়েছি।'
নির্বাচনী গঠনতন্ত্রের চার ধারায় বলা আছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নিয়মিত ও বৈধ শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সদস্য বলে গণ্য হবেন। কেবল তারাই ভোটার বলে বিবেচিত হবেন এবং ছাত্র সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
এ ক্ষেত্রে শর্ত হচ্ছে, যে সকল শিক্ষার্থী স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ছয় (চার+দুই) বছর অথবা স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে দুই (এক+এক) বছর ধরে অধ্যয়ন করছেন, কেবল সে সকল শিক্ষার্থীর নাম জাকসু ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে এবং তারা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।
গঠনতন্ত্রের আট ধারায় উল্লেখ আছে, বিশ্ববিদ্যালয় ও হলের যাবতীয় পাওনা পরিশোধ করা সাপেক্ষে সংসদে ও যেকোনো নিয়মিত সদস্য নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও ভোট প্রদান করতে পারবে।
প্রার্থিতা বাতিলের বিষয়ে অমর্ত্য রায় বলেন, 'আমি প্যানেলের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করব। যা-ই হোক, নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিষয়টির সমাধান হবে বলে আশা করি।'
Comments